logo
আপডেট : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৮:৫৩
দিনের অন্য ম্যাচে মুখোমুখি খুলনা টাইগার্স ও সিলেট সানরাইজার্স
কুমিল্লার সামনে দুরন্ত বরিশাল
মাহমুদুন্নবী চঞ্চল

কুমিল্লার সামনে দুরন্ত বরিশাল

সবুজে ঘেরা নান্দনিক স্টেডিয়াম। অনেকদিন ঝড় ওঠে না ব্যাটে-বলে। সেই তুঙ্গস্পর্শী লড়াইয়ের অপেক্ষায় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষ দুটি দলের লড়াইয়ে কাল থেকে শুরু হচ্ছে বিপিএলের সিলেট পর্ব। শীর্ষে থাকা দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স মুখোমুখি হবে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফরচুন বরিশালের। যারা স্বাগতিক সেই সিলেট সানরাইজার্স লড়বে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের বিরুদ্ধে। প্রথম ম্যাচ বেলা সাড়ে ১২টায়, দ্বিতীয় ম্যাচ শুরু সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায়। দুটি ম্যাচই সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস ও গাজী টিভি।

তিন পর্ব মিলিয়ে পয়েন্ট তালিকায় শক্ত অবস্থান কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। ছয় ম্যাচে চার জয় ও এক হার। ম্যাচ পরিত্যক্তের কারণে এক পয়েন্ট। সব মিলিয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে ভিক্টোরিয়ান্স শিবির। সেখানে ফরচুন বরিশালের পয়েন্টও ৯। তবে ম্যাচ একটি বেশি। রান রেটে পিছিয়ে থাকায় দ্বিতীয় স্থানে সাকিবরা।

সাত ম্যাচে সাত পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা (তিন জয় ও তিন হার)। এরপরই মুশফিকের খুলনা টাইগার্সের অবস্থান। ছয় ম্যাচ খেলেছে দলটি। সমান তিন জয় ও হারে পয়েন্টও ৬। শুরুর দিকে দুর্দান্ত গতিতে আগানো চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স অনেকটাই নাজুক অবস্থার মধ্যে রয়েছে। ৮ ম্যাচে দলটির জয় মাত্র তিন ম্যাচে, হার পাঁচটি। ৬ পয়েন্ট নিয়ে মিরাজদের অবস্থান পঞ্চম। তলানিতে যথারীতি সিলেট সানরাইজার্স। ৬ ম্যাচে দলটি এখন পর্যন্ত পেয়েছে একটি জয়ের দেখা। চার হার। পয়েন্ট ভাগাভাগির কারণে এসেছে এক পয়েন্ট। সব মিলিয়ে তিন পয়েন্ট নিয়ে সিলেট সবার নিচে।

দিনের উদ্বোধনী ম্যাচে কুমিল্লা-বরিশাল আজ মুখোমুখি। লড়াইটা হবে আগুনে, তা সহজেই অনুমেয়। কারণ বিপিএলের অন্য দলগুলোর তুলনায় ফর্মের তুঙ্গে আছে এই দুটি দল। প্রথমেই আসা যাক কুমিল্লাকে নিয়ে। চলমান বিপিএলে কুমিল্লা একমাত্র দল যারা মাত্র একটি ম্যাচে হেরেছে। সেখানে বরিশাল হেরেছে দুটি ম্যাচ। ঢাকা ও খুলনা হেরেছে তিন ম্যাচ। সিলেট হেরেছে চারটিতে। সবচেয়ে বেশি পাঁচ ম্যাচ হেরেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

কুমিল্লা একমাত্র দল যারা টানা তিন ম্যাচ জিতেছে। শুরুটা সিলেটকে হারিয়ে। এরপর বরিশাল ও চট্টগ্রাম। চতুর্থ ম্যাচে এসে কুমিল্লা পায় হারের তিক্ত স্বাদ। সেটা চট্টগ্রাম পর্বে। কুমিল্লাকে ৫০ রানে হারায় মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা। পরের ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে রীতিমতো উড়িয়ে আবার জয়ের ধারায় ফেরে কুমিল্লা। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে তারা হারায় ৯ উইকেটের ব্যবধানে। মিরপুরে বৃষ্টি বিঘ্নিত সেই ম্যাচে ১৮ ওভারে চট্টগ্রাম করেছিল ১৩৮। জবাবে ১৬.৩ ওভারে মাত্র এক উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ইমরুল কায়েস শিবির। ফিরতি ঢাকা পর্বে দারুণ এই জয়ের পরদিন কুমিল্লা খেলতে পারেনি ঢাকার বিরুদ্ধে। বৃষ্টিতে ভেসে যায় সেই ম্যাচ।

অন্যদিকে সাকিবের বরিশালও আছে বেশ তুঙ্গে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম পর্ব থেকে। এই পর্বে টানা তিন ম্যাচ জিতেছে বরিশাল একমাত্র দল হিসেবে। প্রথমে হারায় খুলনা টাইগার্সকে। পরের ম্যাচেও খুলনাকে। তৃতীয় ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিরুদ্ধে। ফিরতি ঢাকা পর্বে একটা ম্যাচ ছিল বরিশালের। কিন্তু সিলেটের বিরুদ্ধে ম্যাচটি হয় বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত।

আজকের ম্যাচ বরিশালের জন্য প্রতিশোধেরও। কারণ প্রথম পর্বে এই কুমিল্লার কাছে হেরেছিল সাকিবরা। তাও ৬৩ রানের বড় ব্যবধানে। মিরপুরের সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে সাত উইকেটে ১৫৮ রান করেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। জবাবে বরিশাল গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ৯৫ রানে। সেই হারের শোধ তুলে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে চোখ সাকিবদের। তবে ছেড়ে কথা বলবে না কুমিল্লাও। জয়ের ধারায় থাকাই দলটির মূল লক্ষ্য।

দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেট লড়বে খুলনা টাইগার্সের বিরুদ্ধে। নিজেদের ভেন্যুতে সিলেট মরিয়া জয়ের জন্য। বিপিএলে যদিও সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে এই সিলেট। ছয়টি ম্যাচ খেলা হয়ে গেছে। অথচ জয় মাত্র একটি। চার ম্যাচে হার। এক ম্যাচ পয়েন্ট ভাগাভাগি। দুটি ম্যাচে জয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা জাগিয়ে হারতে হয়েছে তাদের। সেই ভুল বারবার করতে রাজি নয় মোসাদ্দেক শিবির। আজ মুশফিকের খুলনা টাইগার্সের বিরুদ্ধে জয়ের জন্য মরণপণ লড়বে সিলেট, তা সহজেই অনুমেয়। খুলনা টাইগার্স অবশ্য মোটামুটি একটা অবস্থানে আছে। পয়েন্ট তালিকায় দলটির অবস্থান চতুর্থ। ছয় ম্যাচে সমান তিনটি করে জয় ও হার। শেষ ম্যাচে খুলনার জয় অবশ্য এই সিলেটের বিরুদ্ধেই। গত তিন ফেব্রুয়ারি মিরপুরে খুলনা জিতেছিল ৯ উইকেটে। সেই জয় অবশ্য আজ আত্মবিশ^াসী করে তুলবে মুশফিকদের, তা বলাই বাহুল্য।