logo
আপডেট : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৯:৫৪
ইউক্রেন আক্রমণে ৭০ ভাগ প্রস্তুত রাশিয়া : যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেন আক্রমণে ৭০ ভাগ প্রস্তুত রাশিয়া : যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, সামনের সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনে একটি পূর্ণমাত্রার অভিযান চালাতে যে ধরনের সামরিক সক্ষমতা দরকার, রাশিয়া এখন পর্যন্ত তার প্রায় ৭০ শতাংশ অর্জন করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মাটিতে বরফ জমে যখন তা শক্ত হয়ে যাবে, তখন মস্কোর পক্ষে ভারি সামরিক যানবাহন নিয়ে চলাচল করা সহজ হবে।
বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তের কাছে এক লাখের বেশি সৈন্য এনে জড়ো করেছে। তবে রাশিয়া বারবার দাবি করছে যে, ইউক্রেনে কোনো আক্রমণের পরিকল্পনা রাশিয়ার নেই।

ইউক্রেন আক্রমণের রাশিয়ার ৭০ ভাগ প্রস্তুতির খবর দিলেও মার্কিন কর্মকর্তারা এই দাবির সপক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ হাজির করেননি।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়ার এই প্রস্তুতির তথ্য তারা গোয়েন্দা সূত্র থেকে পেয়েছেন এবং বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ার কারণে তারা বেশি কিছু খোলাসা করেননি।

যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমকে কর্মকর্তারা আরো জানিয়েছেন, আমরা এখনো জানি না যে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ইউক্রেন আক্রমণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা, তবে এই সংকট কূটনৈতিকভাবে সমাধান করা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মার্চের শেষদিকে যে ধরনের আবহাওয়া থাকবে, তখন রাশিয়ার ভারি সামরিক সরঞ্জাম পরিবহণের জন্য সবচেয়ে ভালো সুযোগ করে দেবে।

এই কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে প্রায় ৫০ হাজার বেসামরিক মানুষ মারা যেতে পারে। রাশিয়ার আক্রমণের মুখে কয়েকদিনের মধ্যেই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের পতন ঘটবে।’
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে লাখ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে পালাতে থাকবে। ফলে ইউরোপে এক ভয়াবহ শরণার্থী সংকট দেখা দেবে।

রাশিয়ার সম্ভাব্য ইউক্রেন আক্রমণের মুখে ন্যাটোর শক্তি বাড়ানোর জন্য পোল্যান্ডে একদল যুক্তরাষ্ট্রের সেনা এসে পৌঁছেছে। এই দলের প্রথম দলটি গতকাল পোল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্বে রযেসযো শহরে জড়ো হয়েছে। জো বাইডেনের প্রশাসন ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছে যে, তারা পূর্ব ইউরোপে আরো তিন হাজার সেনা পাঠাবে।

ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সেনা মোতায়েনকে মস্কো দাবি করছে, ওই অঞ্চলে সৈন্য পাঠানো হয়েছে সামরিক মহড়ায় অংশগ্রহণ করার জন্য। তবে ইউক্রেন এবং এর পশ্চিমা মিত্রদেশগুলো রাশিয়ার এই দাবি নাকচ করে বলে আসছে ক্রেমলিন হয়তো ইউক্রেন আক্রমণের পরিকল্পনা করছে।

রাশিয়া আট বছর আগে ইউক্রেনের ক্রাইমিয়া অঞ্চল দখল করে নেওয়ার পর এবং পূর্বদিকের ডনবাস অঞ্চলের বিদ্রোহীদের রক্তাক্ত বিদ্রোহকে সমর্থন করায় এই অঞ্চলে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
মস্কো ইউক্রেনের সরকারের বিরুদ্ধে মিনস্ক চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে। এই চুক্তি করা হয়েছে পূর্ব ইউক্রেনে শান্তি ফিরিয়ে আনতে।

পূর্ব ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ এলাকা রাশিয়ার সমর্থনপুষ্ট বিদ্রোহীরা নিয়ন্ত্রণ করে। সেখানে ২০১৪ সালের পর থেকে যুদ্ধে এ পর্যন্ত ১৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। রাশিয়া দাবি জানাচ্ছে, ইউক্রেনকে যেন ন্যাটো জোটে নেওয়া না হয়।

রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব সেই স্নায়ুযুদ্ধের সময় থেকে। বিশে^ সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র আছে এই দুটি দেশের হাতেই। স্নায়ুযুদ্ধের সময় ইউক্রেন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল।

বিবিসি থেকে অনূদিত