logo
আপডেট : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৯:৪০
দীর্ঘ জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে শতাধিক পরিবার
সঞ্জিব দাস, ফরিদপুর

দীর্ঘ জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে শতাধিক পরিবার

ঘরের পাশে জমে থাকা পানি পার হয়ে একজন নারী হেটে যাচ্ছেন

ফরিদপুরে দীর্ঘদিনের জলবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে তিন শতাধিক পরিবার। জমিতে পানি জমে থাকায় কৃষকরা চাষ করতে পারছেন না। এ ছাড়া তৈরি হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। এর ফলে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে দিশেহারা এখানকার বাসিন্দারা। এসব এলাকার বাসিন্দারা নিজ বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় যেতেও সাঁকো ব্যবহার করছেন। শীতে তাদের অবস্থা আরও খারাপ।

ফরিদপুর শহরতলির ডিক্রীরচর ইউনিয়নের সিঅ্যান্ডবি ঘাটসংলগ্ন আইজউদ্দিন মাতুব্বরের ডাংগি গ্রামে এমন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ওই এলাকায় দুটি কালভার্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। পার্শ্ববর্তী পদ্মা নদীর বালুর পানি এলাকাটিতে ছড়িয়ে পড়ে সৃষ্টি করে জলাবদ্ধতা। পাশাপাশি বর্ষা ও বৃষ্টির পানিতেও সৃষ্টি হচ্ছে এমন অবস্থা। এভাবেই চলছে চার বছরের বেশি সময় ধরে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, পানি নিষ্কাশনের যে পথ ছিল, সেগুলো নানাভাবে দখল হয়ে গেছে। দখলকারীরা প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। ফলে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি অনেকবার স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে। যদিও স্থানীয় প্রশাসন আশ্ব্স দিয়েছে- দ্রুত এই জলবদ্ধতা নিরসন করা হবে।

পানিবন্দি এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম, আসমা বেগম, মোমেনা বেগম, হায়দার খানসহ অনেকেই জানান, এই গ্রামে পাশে যে মাঠ সেখানে ধানসহ বিভিন্ন ফসল হতো। কিন্তু ৪/৫ মাস ধরে পানি জমে আছে। সেখানে কোনো ক্ষেতখামার করা যায় না। প্রতিটি বাড়ির চারপাশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় পরিবেশ বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে।

তারা জানিয়েছেন, ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন রোগে ভুগছে। এ ছাড়াও বর্ষার পানি বের হওয়ার কোনো পথ নেই। ফলে জলাবদ্ধতার সমস্যাও প্রকট হচ্ছে। তবে স্থানীয় চেয়ারম্যান যদি এ ব্যাপারে যথেষ্ট ভূমিকা নিত, তা হলে হয়তো পানির এই সমস্যা থাকত না বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য পাঞ্জু শেখ বলেন, ‘বালু ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ বহু আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের পথগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোনো কাজ হয় না। তাই দীর্ঘসময় ধরে চলা জলাবদ্ধতা সমস্যারও সমাধান হচ্ছে না।’

স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা নাজমুল হাসান বলেন, ‘এই জলাবদ্ধতায় আমরা বসবাস করতে পারছি না। শিশুদের নিয়ে পরিবারের সদস্যরা রয়েছে বিপদে। গৃহপালিত পশুপাখি পালন করা যাচ্ছে না। দ্রুত এই জলাবদ্ধতার সমাধান না করলে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হবে না।’

ডিক্রীরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু ফকির বলেন, ‘বিষয়টি উপজেলা উন্নয়ন সভায় তোলা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দিয়েছে- দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরসন করবে।’

সম্প্রতি এলাকাটি পরিদর্শনের আসেন ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল আলম। তিনি বলেন, ‘জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই এলাকার বাসিন্দাদের। নানাবিধ সমস্যার কারণে বর্ষা বা বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে যেতে পারছে না। তা ছাড়া আমাদের পানি নিষ্কাশনের পথগুলো অত্যন্ত নাজুক। আমরা দ্রুতই এই জলাবদ্ধাতার সমাধানের চেষ্টা করব।’