ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের হারুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়েছিলেন আব্দুল মালেক ও আব্দুল মজিত নামে দুই ব্যক্তি। ওই সময় তারা জানতে পারেন তাদের ভোট অন্য কেউ দিয়ে দিয়েছে। পরে মন খারাপ করে কেন্দ্র থেকে বেড়িয়ে আসেন তারা।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আব্দুল মালেক উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের হারুয়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে এবং আব্দুল মজিত একই এলাকার নাছির উদ্দিনের ছেলে।
দৈনিক ভোরের আকাশকে ভোটার আব্দুল মালেক বলেন, ‘কেন্দ্রে যাওয়ার পর পোলিং কর্মকর্তারা আমাকে বলেছে আপনার ভোট হয়ে গেছে। আর ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই। পরে আমি আঙুল দেখিয়ে বলি, আমার আঙুলেতো কালির দাগ নেই। তাহলে ভোট দিলাম কখন? পরে তারা কেন্দ্র থেকে চলে যেতে বলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে অন্য ভোটারদের সামনে লজ্জায় পড়তে হয়েছে। আগে জানলে ভোট দিতেই আসতাম না।’
একই পরিস্থিতির শিকার আরেক ভোটার আব্দুল মজিত বলেন, ‘নির্বাচন আসলে উৎসব মনে হয়। বাড়ির সবাইকে এক সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রে এসেছি। অন্যরা ভোট দিতে পেরেছে। কিন্তু আমি কেন্দ্রের ভেতরে গেলে জানানো হয় আপনার ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। অথচ আমি ভোট দেইনি।
‘বিষয়টি নিয়ে কিছুক্ষণ বাগবিতণ্ডাও করেছি, কিন্তু সমাধান হয়নি। তখন পোলিং এজেন্টরা বলেছে বাহিরে না গেলে সমস্যা হবে। পরে বাধ্য হয়ে চলে আসি’, বলেন আব্দুল মজিত।
তিনি বলেন, ‘আমার মতো আব্দুল মালেক ভাইও ভোট দিতে পারেননি। এখন জানতে ইচ্ছা করছে তাহলে আমাদের ভোট দিল কে? নাগরিক হিসেবে ভোট দেওয়া আমার অধিকার। যে বা যারাই আমার ভোট দিয়েছে, তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হারুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আব্দুল ফারুক বলেন, ‘ভোটার আসলে অবশ্যই ব্যালট পেপার দেওয়া হবে। না দেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। তবে, একজন দুইবার ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
ভোট দিলে আঙুলে কালির দাগ থাকবে না কেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ওই দুইজন আমাকে ভোট না দেওয়ার বিষয়ে কিছু জানায়নি। ভোট দিলে অবশ্যই আঙুলে কালির দাগ থাকবে। হয়তো অন্য কোনো সমস্যা থাকতে পারে।’
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহবুবুল হক বলেন, ‘কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগও দেয়নি।’
সপ্তম ধাপে সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এরপর ভোট গণনা শুরু হয়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।