logo
আপডেট : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১২:০৫
বাতাসে খুলে পড়ল ৭০ কোটি টাকার ভবনের গ্লাস
রফিক রাজা, মাদারীপুর

বাতাসে খুলে পড়ল ৭০ কোটি
টাকার ভবনের গ্লাস

ভবন থেকে খুলে পড়া গ্লাস। ছবি ভোরের আকাশ

মাদারীপুরে প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি সমন্বিত অফিসগুলোর ১০তলা ভবনের জানালার ২৪টি গ্লাস সঠিকভাবে স্থাপন করা হয়নি। এ কারণে হালকা বাতাসেই তা খুলে পড়ে ভেঙে গেছে।


মাদারীপুর গণপূর্ত প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শহরের শকুনী লেকের উত্তর পাড়ের পুরোনো জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জমিতে ৬৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা খরচে ২০১৬ সালে ১০তলা সরকারি সমন্বিত অফিস ভবনটিন নির্মাণকাজ শুরু হয়, যা শেষ হয় গত বছরের আগস্ট মাসে। গত ১ ডিসেম্বর থেকে ওই ১০তলা ভবন ব্যবহারের জন্য ২৫টি অফিস বরাদ্দ পায়।


মূলত এখানে ব্যাংক ও গণপূর্ত কন্ট্রোল রুম, ক্যাফেটেরিয়া ও পোস্ট অফিস, জেলা নির্বাচন অফিস, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র অফিস, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, জেলা সমবায় কার্যালয়, জেলা মার্কেটিং অফিস, জেলা তথ্য অফিস, একটি বাড়ি একটি খামার, ওষুধ তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়, জেলা পাট অধিদপ্তরের কার্যালয়, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট অফিস, জেলা সঞ্চয় অফিস, জেলা ক্রীড়া অফিস, জেলা সমাজসেবা অফিস, জেলা শিশু একাডেমি, কাস্টমস-এক্সসাইজ ও ভ্যাট বিভাগ, হিসাব তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়, সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারের কার্যালয়, জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো, জেলা প্রশাসকের বিশেষ কার্যালয়, গণপূর্ত উপ-বিভাগীয় কার্যালয় নিয়ে মোট ২৫টি সরকারি অফিসকে ভবন বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে সবগুলো অফিস এখনো নতুন ভবনে এসে তাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।


সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি মাদারীপুরে দিন-রাত বৃষ্টি ও হালকা বাতাস হয়। এতে ভবনটির ষষ্ঠতলার পূর্বদিকের উত্তরপাশের ৪২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট উচ্চতার জানালার ২৪টি গ্লাস খুলে পড়ে ভেঙে যায়। যে অংশের জানালার গ্লাস ভেঙে গেছে, সেই অংশের রুমগুলোতে এখনো কোনো অফিস কার্যক্রম শুরু হয়নি। এ ঘটনায় ত্রুটিপূর্ণভাবে জানালার গ্লাসগুলো স্থাপন করার অভিযোগ উঠলে ঠিকাদার ও গণপূর্ত কর্তৃপক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন।


এ বিষয়ে মাদারীপুরের গণপূর্ত নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম খান বলেন, ‘নতুন ১০তলা ভবনের ষষ্ঠতলায় জানালার গ্লাসগুলো সঠিকভাবে স্থাপন না করার কারণেই বাতাসে তা পড়ে ভেঙে গেছে। এখন আমরা বিষয়টি ঢাকায় জানিয়েছি। খুব দ্রুত ভবনের আরো কি কি সমস্যা আছে, সেসব বিষয় একটি কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখব।’


ওই ভবনের স্থানীয় ঠিকাদার সৈয়দ আবুল বাশার বলেন, ‘ছয়তলার জানালার গ্লাসগুলো বাতাসে ভেঙে পড়ার পেছনে আমাদের কোনো ভুল ছিল না। যদি ভুল থেকে থাকে, সেটা গণপূর্ত কর্মকর্তাদের। আমাদের কর্মীরা তো ঠিকমতোই গ্লাসগুলো বসিয়েছেন। এটা দেখা ও মনিটর করার কথা ইঞ্জিনিয়ারদের। এখন তারাই ভালো বলতে পারবেন, কি কারণে গ্লাসগুলো ভেঙে গেছে। এ বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না।’