গোপালগঞ্জে জাকিয়া আক্তার নামে এক গৃহবধূকে হত্যামামলার রায়ের তারিখ পিছিয়ে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আব্দুল্লাহ ভূঁইঞা ভোরের আকাশকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জাকির হোসেনের আদালতে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু রায় প্রস্তুত হয়নি। তাই নতুন তারিখ দিয়েছেন আদালত।’
গত ২৭ জানুয়ারি মামলার রায়ের দিন ধার্য ছিল। সেদিন বিচারক ছুটিতে থাকায় তা পিছিয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি ধার্য করা হয়। এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ধার্য করা হয়েছিল।
মামলার আসামিরা হলেন- জাকিয়ার স্বামী মোর্শেদায়ান নিশান, নিশানের ভাই এহসান সুশান, ভগ্নিপতি হাসান শেখ ও ম্যানেজার আনিছুর রহমান।
মোর্শেদায়ান নিশান মাছরাঙা টেলিভিশনের গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি ও স্থানীয় দৈনিক আমাদের গোপালগঞ্জ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। তিনি পলাতক রয়েছেন। অপর তিন আসামি জামিনে ছিলেন। গত ১৩ জানুয়ারি আদালত তিন আসামির জামিন বাতিল করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জাকিয়া আক্তারকে খুনের ঘটনায় তার বাবা জালাল উদ্দিন মল্লিক চারজনের নামে ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালে নিশানের সঙ্গে জাকিয়ার বিবাহ হয়। তাদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই নিশান ও তার পরিবারের সদস্যরা এক কোটি টাকা যৌতুকের জন্য জাকিয়াকে চাপ দিনে। তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন তারা। সন্তানের কথা চিন্তা করে সে নির্যাতন সহ্য করতেন জাকিয়া।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে তারা জাকিয়ার কাছে মোর্শেদায়ান নিশানের নামে ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার জন্য এক কোটি টাকা যৌতুক দাবি করেন। জাকিয়া অস্বীকৃতি জানালে তারা তাকে জোর করে শোয়ার ঘর থেকে রান্নার ঘরে নিয়ে যান। সেখানে পরিবারের সদস্যদের প্ররোচনায় তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন নিশান।
মামলা তদন্ত করে একই বছরের ৯ জুন গোপালগঞ্জ জেলার ডিবি পুলিশের পরিদর্শক সওগতুল আলম চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর গোপালগঞ্জ জেলা জজ আদালতে তাদের বিচার শুরু হয়। মামলায় সাত জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।
মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি আসার পর আরো ১৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এ নিয়ে অভিযোগপত্রের ২০ সাক্ষীর সবারই সাক্ষ্য নেন আদালত।