logo
আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১২:৩০
এক জোড়া ময়ূর থেকে একটি খামার
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা

এক জোড়া ময়ূর থেকে একটি খামার

কুমিল্লার হোমনা উপজেলার বাবরকান্দি গ্রামের যুবক শাহ আলীর ময়ূর খামার। ছবি ভোরের আকাশ

খামারের ভেতর পেখম তুলে দলবেঁধে ময়ূর নাচছে। কেউ আবার খাবার খাচ্ছে। কেউবা আবার ডানা ঝাঁপটে ওড়ার চেষ্টা করছে। কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার বাবরকান্দি গ্রামের যুবক শাহ আলীর ময়ূরের খামারে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে। ২০১৯ সালের শেষদিকের ঘটনা। ওইসময় নিজের জমানো টাকায় শখের বশে এক জোড়া ময়ূর কেনেন শাহ আলী। এখন সেই এক জোড়া ময়ূর থেকে বাণিজ্যিক খামার গড়ে তুলেছেন। ময়ূর বিক্রি করে নিজের ও পরিবারের সচ্ছলতা এনেছেন। স্বপ্ন দেখছেন খামারটিকে আরো বড় করার।


জানা গেছে, প্রথমে কেনা ওই ময়ূর জোড়ার দাম ছিল ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। ওই এক জোড়া ময়ূর প্রথমে ২৪টি ডিম দেয়। সেখান থেকে ১৭টি বাচ্চা হয়। তখন এগুলো লালন-পালনের জন্য ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি শেড নির্মাণ করেন শাহ আলী। এরপর ২০২০ সালের শেষদিকে খামার থেকে ময়ূর বিক্রি শুরু করেন। বর্তমানে এক জোড়া ময়ূর ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন তিনি। বর্তমানে খামারে ১০৫টি ময়ূর আছে। যার বাজারমূল্য ৩০ লাখ টাকা। তবে এগুলো ছোট এবং বেশ কয়েকটি ময়ূর ডিম দেবে। চলতি বছর জুন-জুলাই মাসে আবার ময়ূর বিক্রি করবেন শাহ আলী।


ময়ূর কোন ধরনের খাবার খায় এবং এ ময়ূর কাদের কাছে বিক্রি করা হয়Ñ এমন প্রশ্নে শাহ আলী জানান, ময়ূর সাধারণত নরম ঘাস খায়। এছাড়া মুরগির জন্য যেসব দানাদার খাবার বাজারে পাওয়া যায়, সেসব খাবার খায়। তিনি বলেন, ‘আমার খামারের পাশে কৃষিজমিতে প্রচুর সবুজ ঘাস জন্মে। সেগুলো তুলে এনে ময়ূরকে খেতে দিই। মূলত যারা শৌখিন লোক বা শিল্পপতি যারা আছেন, তারা ময়ূরের ক্রেতা। তাদের ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানায় লালনপালন করেন।’


খামার নিয়ে ভবিষ্যতে কী পরিকল্পনা আছে' এমন প্রশ্নে শাহ আলী বলেন, ‘২০২০-২১ সালে ২০ লাখ টাকার ময়ূর বিক্রি করেছি। খরচ বাদে মুনাফা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। যেহেতু কম খরচে ময়ূর লালন-পালন করা যায় এবং মুনাফাও ভালো হয়। তাই এ খামারটি আরো বড় করার পরিকল্পনা আছে। তবে আমার খামারে ভেড়া-তিতির পাখিও আছে।’


কুমিল্লা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কুমিল্লায় শাহ আলীর ছাড়া আর কোনো ময়ূরের খামার নেই। নিঃসন্দেহে ময়ূর খামার একটি ভালো উদ্যোগ। আমরা তাকে সাধুবাদ জানাই। কোনো বেকার যুবক যদি এমন উদ্যোগ নেন' আমরা তাকে স্বাগত জানাব এবং প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করব।’