অতিরিক্ত সময়ের গোলে ব্রাজিলের ক্লাব পালমেইরাসকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্ব ক্লাব কাপ জয়ের কীর্তি গড়েছে ইংলিশ ক্লাব চেলসি। শনিবার রাতে আবুধাবীর মোহাম্মদ বিন জায়েদ স্টেডিয়ামের খেলায় চেলসি ২-১ গোলে জয় পেয়েছে। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ অমীমাংসিত থাকার পর অতিরিক্ত সময়ে কাই হাভার্টজের পেনাল্টিতে করা গোলে শিরোপা নিশ্চিত করে চেলসি। ১১৭ মিনিটে গোলটি করেন তিনি।
ফিফা ক্লাব ইতিহাসে এই প্রথমবার শিরোপার দেখা পেলো ইংলিশ ক্লাবটি। এর আগেও তারা একবার ফাইনাল খেললে শিরোপা জিতেছে এবারই। সেবারও ফাইনালে তারা আর এক ব্রাজিলিয়ান ক্লাব করিন্থিয়ান্সের মুখোমুখি হয়েছিল। সে ম্যাচে করিন্থিয়াসের জয় চেলসিকে হতাশায় ডুবিয়েছিল। এবার তারা শুধু শিরোপা জয় করেনি প্রতিশোধ নিয়েছে। সে সঙ্গে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে উপরে ইউরোপিয়ান ক্লাবের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখেছে।
দুই উপমহাদেশের দুই সেরা ক্লাবের লড়াইটি শুরু থেকেই জমজমাট হয়ে উঠেছিল। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে প্রথমার্ধে কেউ গোলের দেখা পায়নি। অবশেষে সেমিফাইনালের গোলদাতা রোমেলু লোকাকুর গোলে ম্যাচে প্রথম গোল উৎসব হয়। তার গোলে এগিয়ে যায় চেলসি। কালুম হাডসন ওদয়ের ক্রস থেকে লুকাকু হেড করে গোল করেন। তবে বেশিক্ষণ তারা এ গোলের আনন্দ উপভোগ করতে পারেনি। ১০ মিনিট পরেই পালমেইরাস গোল পরিশোধ করে খেলায় উত্তেজনা ফিরিয়ে আনেন। পেনাল্টি থেকে গোল করেন রাফায়েল ভেইগা। পেনাল্টি কর্নার থেকে উড়ে আসা বল থিয়াগো সিলভার হাতে লাগলে রেফারি ভিএআর দেখে পেনাল্টি সিদ্ধান্ত দেন।
৬৪ মিনিটে ভেইগার গোলের পর নির্ধারিত সময়ে আর কোনো দল গোলের দেখা পায়নি। ফলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও গোলের দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না। দুই দল যখন টাইব্রেকারের জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ঠিক তখনই পালমেইরাসের ওপর আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে সিজার আজপিলিকুয়েতা যে শট নিয়েছিলেন তা লুয়ান গার্সিয়ার হাতে লাগলে চেলসি পেনাল্টি পায়। তা থেকে কাই হাভের্টজ গোল করে চেলসি সমর্থকদের আনন্দে ভাসিয়ে দেন।
গোল হজমের পরপরই পালমেইরাসের অবস্থা আরও নাজুক হয়। হাভের্টজকে মারাত্মক ফাউলের কারণে এ সময়ে তাদের ডিফেন্ডার লুয়ান লাল কার্ড দেখে বহিষ্কৃত হন।
গত বছরের জানুয়ারিতে টমাস টুখেল দায়িত্ব নেওয়ার পর চেলসির এটা তৃতীয় শিরোপা জয়। টুখেল দায়িত্ব নেওয়ার পর হাভের্টজের সঙ্গে তার রসায়নটা বেশ ভালো জমেছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালেও জয়সূচক গোল করেছিলেন তিনি।
এদিকে এবারের ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের মধ্যে দিয়ে চেলসি একটা পূর্ণতা পেয়েছে। ২০০৩ সালে রাশিয়ান ধনকুবের রোমান আব্রামোভিচ চেলসির মালিকানা নেওয়ার পর ইংলিশ ক্লাবটি সব ধরণের বড় ট্রফি জয়ের কীর্তি দেখাল।
ম্যাচ শেষে টুখেল বলেন, ‘আমরা থামতে চাই না। আমরা ট্রফি জয়ের অভ্যাসটা ধরে রাখতে চাই।’