logo
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১১:১৬
দৈন্যদশা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের
যোবায়ের আহমদ

দৈন্যদশা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের

দুই মাস ধরে নষ্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা বশীর মেডিকেল সেন্টারের চোখ দেখানো মেশিন। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন সেবা নিতে আসা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী। মেশিনটি মেরামত করতে আরো এক থেকে দেড় মাস সময় লাগবে বলে জানা গেছে। এদিকে এক যুগ আগে কেনা আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটিরও দৈন্যদশা অবস্থা। ঘোলাটে হয়ে গেছে স্ক্রিন, দিচ্ছে না সঠিক ফলাফল।


মেডিকেল সেন্টারের মেডিকেল অফিসার (চক্ষু) জাকির হোসেন বলেন, মেশিনটি খারাপ থাকায় সেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা এসে ফিরে যান। কেউ কেউ মেজাজ খারাপ করেন। মেডিকেল সংশ্লিষ্টদের মতে, মেরামতের জন্য দীর্ঘ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয় বিধায় মেশিন ঠিকঠাক করতে দীর্ঘসূত্রতা দেখা দিচ্ছে। তবে রেজিস্ট্রার ভবনের এক কর্মকর্তা জানান, যাদের প্রয়োজন (মেডিকেল) তারা যদি আন্তরিক না হয়, তাহলে দেরি তো হবেই।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেজিস্ট্রার ভবনের এই কর্মকর্তা আরো জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী করলে তো বেশি সময় লাগে না। কিন্তু কেউ তো নিয়ম মানে না। কোনো ফাইল আমাদের অফিসে চব্বিশ ঘণ্টার বেশি আটকে থাকে না। কোনো ফাইল ট্রেজারারের অফিসে ২৪ ঘণ্টার বেশি আটকে থাকে না। তিনি বলেন, ঢাবির মেডিকেল সেন্টারে প্যাথলজি, এক্স-রে, ডেন্টাল, আল্ট্রাসনোগ্রাম এবং চক্ষু Ñমোট পাঁচ ধরনের ক্লিনিক্যাল সেবার সুযোগ রয়েছে। করোনাকালে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় প্রায় সব মেশিনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। যেকোনো মেশিন নষ্ট হলে অথবা সমস্যা দেখা দিলে সচল করতে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এতে বছরের অধিকাংশ সময়ই সেবা দান বন্ধ থাকে।
সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো আর্থিক খাতে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত ট্রেজারার অনুমোদন দিতে পারেন। ৭৫ হাজার পর্যন্ত উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অনুমোদন দেন। তার ওপরে গেলে উপাচার্য। এর বেশি হলে সিন্ডিকেটের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়।


গত বছরের ২০ ডিসেম্বর চোখের পাওয়ার পরীক্ষার মেশিনটি মেরামত প্রয়োজন মর্মে হিসাবপরিচালক বরাবর চিঠি দেয় মেডিকেলের স্টোর অফিস। গত ১ জানুয়ারি ট্রেজারার থেকে অনুমোদন পেয়ে ফাইলটি আবার স্টোরে ফেরত আসে। এখন মেডিকেলের বোর্ডে এটি অনুমোদন হবে। তারপর ফাইন্যান্স কমিটিতে পাস হয়ে সিন্ডিকেটে যাবে।


এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে সিনিয়র স্টোর অফিসার হুমায়ূন কবীর দায়ী করেন দীর্ঘ প্রক্রিয়াকে। তিনি বলেন, টেন্ডার হয়ে গেছে, সিন্ডিকেটে যাবে। সেখানে পাস হলে মেরামত হবে। তার আগে তো আমাদের কিছু করার নাই। কর্তৃপক্ষ যদি আগে অর্ডার দেয় তালেই আমরা মেরামত করতে পারি। কিন্তু টেন্ডারের নিয়মানুযায়ী সিন্ডিকেটে পাস হওয়া ছাড়া এটা সম্ভব নয়।


ঢাবির হেলথ বোর্ডের চেয়ারম্যান উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, কোনো মেশিন নষ্ট হলে তারা লিখিত দেবে তারপর আমরা ব্যবস্থা নেব। কিন্তু তারা তো জানায়নি। দুই মাস তো অনেক সময়, আমাকে না জানালে তো আমার জানার কথা না। আমাদের শিক্ষার্থীরা চোখের ডাক্তার দেখাতে আসে, এটা তো চোখের ব্যাপার। আমি যত দ্রæত সম্ভব ব্যবস্থা নেব। আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাড়ে চার লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন একটি আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন কেনার প্রক্রিয়া চলছে। ফাইল এখন উপাচার্যের অফিসে আছে। সেখানে পাস হলে কেনা হবে।