logo
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১১:২৭
‘বসন্ত উৎসব’ ও ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’
বাড়ছে ফুলের কদর
তৌহিদুজ্জামান জিহাদ

বাড়ছে ফুলের কদর

পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে ফুলের দোকানগুলোতে বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। শনিবার শাহবাগ থেকে তোলা ছবি। ভোরের আকাশ

বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী বসন্তের প্রথমদিন ‘বসন্ত উৎসব’ এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’ হিসেবে উদযাপন করা হয়। ঋতুরাজ বসন্ত প্রকৃতিতে ফিরে আসলেই প্রতি বছর তা আমাদের দেশে আনন্দের সঙ্গে পালন করা হয়। আর একই দিনে ভালোবাসা দিবস হওয়ায় এর মাত্রা বেড়ে যায়া দ্বিগুণ। ঋতুরাজ বসন্ত ভালোবাসা দিবসকে পালন করতে বাংলার নারীরা শাড়ি ও ফুল দিয়ে সাজেন মনের আনন্দে।


প্রতি বছর পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ফুলের জোগান দিতে শাহবাগের বেশ কয়েকটি দোকানে নতুন জাতের দেশি ও বিদেশি ফুল রাখা হয়েছে। দিনটিকে প্রধ্যান্য দিয়ে দোকানগুলোতে রাখা হয়েছে রজনীগন্ধা, গোলাপ, বেলি, জুঁই, গাঁদা, গ্লাডিউলাস, মাম, কিউলিস, অর্কিডসহ নানা রকমের ফুল। এবারের বসন্ত উৎসব, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে রাজধানীর ফুল ব্যসায়ীদের লক্ষ্য ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার বিক্রি।


বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস পালনে রাজধানীর শাহবাগের ফুলের দোকানগুলোর আয়োজন দেখতে গিয়ে ভোরের আকাশের প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় ব্যবসায়ীদের। দেখা গেছে, দোকানে দোকানে বাড়তি প্রস্তুতি। ফুলে ফলে ঠাসা প্রতিটি ঘর। বসন্ত আসতে সে আাগমনী বার্তাই দিচ্ছে বাহারি ফুলের আয়োজন।


মালঞ্চ পুষ্প কেন্দ্রের মো. সারোয়ার জানান, এ বছরে আমরা গোলাপ ফুল গ্লাডিউলাস এবং রজনীগন্ধা দিয়ে মাঝারি ও বড় আকারের ফুলের তোড়া তৈরি করেছি। ছোট ৬০০ থকে ৭০০ টাকা এবং বড় তোড়াগুলোর দাম ধরা হয়েছে এক হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। এই দিনটিতে প্রিয় মানুষকে বরণ করতে অনেকেই ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। বিশেষ করে লাল গোলাপ প্রিয় মানুষকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাতে ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশসহ গোটা দুনিয়াজুড়েই গোলাপের মাধ্যমে প্রকাশ হয় হৃদয়ের ভালোবাসা।


শাহবাগে পুষ্প বিতানের মালিক ইউসুফ মিয়া। গত ৫ বছর ধরে গোলাপের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায় নিয়োজিত। দিনটিকে ঘিরে প্রতি বছরই তিনি বিশেষ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এ বছর দিনটি নিয়ে তার পরিকল্পনা জানতে চাইলে জানান, দিনটি উদযাপনে দোকানে সাদা, হলুদ ও গোলাপি রঙের গোলাপ ফুল দোকানে রাখা হয়েছে। রঙের ওপর ভিত্তি করে গোলাপের দাম ঠিক করা হয়। লাল গোলাপের দাম ধরা হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এ ছাড়া হলুদ ও গোলাপি গোলাপের দাম ৫০ টাকা ও সাদা গোলাপের দাম ৪০ টাকা। দিনটিকে ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় খণ্ডকালীন ব্যবসায়ীরা গোলাপ ফুল কিনতে আসে সেক্ষেত্রে তাদের কিছু টাকা ছাড় দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিয়েবাড়িতে প্রচুর গোলাপের প্রয়োজন হয়। তখন গ্রাহকরা অগ্রীম অর্ডার করে থাকে। এগুলোতে নির্দিষ্ট মূল্যে ছাড় দেওয়া হয়।


শাহবাগের ফুলের দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, ফুলের দাম তুলণামূলকভাবে বেশি। গোলাপ রজনীগন্ধা গ্লাডিউলাসসহ সব ফুলের স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, বাংলাবর্ষের সব উৎসবের দিনগুলোতে ফুলের দাম একটু বেশি থাকে। এ ছাড়া সম্প্রতি পরিবহণ খরচ বাড়ায় ফুলের দাম বেড়েছে।


বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাবুল প্রসাদ জানান, করোনার কারণে দীর্ঘদিন ফুলের বাজারে মন্দা ছিল। তবে এই মন্দা কাটাতে আমরা পহেলা বৈশাখ ভ্যালেনটাইন ডে এবং একুশে ফেব্রুয়াারি উপলক্ষে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রির প্রত্যাশা করছি।


ফুলগুলো কোথা থেকে সংগ্রহ করা হয় সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো জানান, মূলত সাভারের গোলাপ গ্রাম থেকেই সংগ্রহ করা হয় বেশির ভাগ গোলাপগুলো। এ ছাড়া আমাদের দেশের ২৯টি জেলায় বাণিজ্যিকভাবে দেশি ও বিদেশি ফুলের চাষ করা হয়, যা ভ্যানে করে সরাসরি সমিতির মাধ্যমে শাহবাগে আনা হয়।