logo
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৭:২৭
পা দিয়ে লিখে এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেলেন তামান্না
এইচ আর তুহিন, যশোর ব্যুরো

পা দিয়ে লিখে এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেলেন তামান্না

তামান্না আক্তার নূরা

নেই দুই হাত, একটি পা। শুধুমাত্র একটি পা নিয়েই এগিয়ে চলেছেন। এক পায়ে লিখে প্রাথমিক-মাধ্যমিকের মতো এবার এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়েছেন অদম্য মেধাবী তামান্না আক্তার নূরা।

রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ঘোষিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে তামান্নার এ কৃতিত্ব দেখা যায়। যশোর শিক্ষাবোর্ডের অধীনে বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি।

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের রওশন আলীর মেয়ে হলেন তামান্না। তামান্নার বাবা স্থানীয় ছোট পোদাউলিয়া দাখিল মাদরাসার (নন এমপিও) শিক্ষক। মা খাদিজা পারভীন শিল্পী গৃহিণী। তিন সন্তানের মধ্যে তামান্না সবার বড়।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জন্মগতভাবেই তামান্নার দুই হাত ও এক পা নেই। শরীরে শুধু একটিমাত্র পা-ই তার সম্বল। এই এক পা দিয়ে লিখে এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি।

এর আগে ২০১৯ সালে ঝিকরগাছার বাঁকড়া জেকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন তামান্না। পান জিপিএ-৫। এর আগে জেএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন তামান্না। অদম্য এ মেয়েটি জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ২০১৩ সালের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায়ও।

মোবাইলে তামান্না বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আমার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু আমার হাত-পা নেই। ডাক্তারি পড়ায় অনেক প্র্যাকটিক্যাল আছে। আমিতো তা করতে পারব না। তাই এখন আমার স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার। কিন্তু পরিবারের আর্থিক অনটনে সেই স্বপ্ন এখন থেমে যাওয়ার উপক্রম। তবে স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠিও লিখেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাবার আর্থিক অবস্থা ভালো না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হলে সেখানে থাকতে হবে। আমি একা একা চলাফেরা করতে পারি না। পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকার সক্ষমতা আমাদের নেই।’

তামান্নার বাবা রওশন আলী বলেন, ‘আমার মেয়ের ফলাফলে খুবই খুশি হয়েছি। কিন্তু তার উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। মেয়েকে ছাত্রাবাসে রেখে পড়ানো সম্ভব নয়। আবার বাসা ভাড়া নিয়েও সম্ভব নয়। খুবই চিন্তায় আছি। মেয়ে বিসিএস ক্যাডার হতে চায়। ওর স্বপ্নপূরণে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব। সবাই দোয়া করবেন।’