logo
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৯:১২
২৮ দিন পর অফিস করলেন শাবি উপাচার্য
সিলেট ব্যুরো

২৮ দিন পর অফিস করলেন শাবি উপাচার্য

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অবরুদ্ধ থাকার ২৮ দিন পর অফিস করলেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহারের একদিন পর রোববার সকালে নিজ কার্যালয়ে এসে দাপ্তরিক কাজ শুরু করেন তিনি। গত ১৬ জানুয়ারি সর্বশেষ অফিস করেছিলেন এই উপাচার্য।

এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে টানা ২৭ দিন ধরে চলা উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

শাবি রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন বলেন, ‘উপাচার্য স্যার আজ সকালে অফিসে আসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দাপ্তরিক বিষয়ে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন। সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ব্যাপারেও কথা বলেছেন। এছাড়া ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালনের ব্যাপারেও সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করেছেন তিনি।’

গত ১৬ জানুয়ারি থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ওইদিন সর্বশেষ অফিস করেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন। ১৬ জানুয়ারি বিকেলে কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পর আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুন্নেসা হলের প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ওইদিন শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করে উপাচার্যকে অবমুক্ত করে বাসায় নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন উপাচার্য। ওই রাত থেকে তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।

১৭ জানুয়ারি থেকে উপাচার্যের বাসার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ১৯ জানুয়ারি থেকে সেখানে অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। এরপর উপাচার্যের বাসার সামনের ফটকে ব্যারিকেড দিয়ে ভেতরে কারো প্রবেশ বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা। একদিনের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলেন তারা। সেসঙ্গে উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

২৬ জানুয়ারি অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙেন। ওইদিনই উপাচার্যের বাসার সামনের ব্যারিকেড তুলে নেন তারা। এরপরও বাসায়ই ছিলেন উপাচার্য।

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ক্যাম্পাসে আসলে ওইদিন বাসা থেকে বের হয়ে মন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেন উপাচার্য। ওই বৈঠকে উপাচার্যকে দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী।

এদিকে, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। এতে উপাচার্যের বিষয়ে তাদের আপত্তির বিষয়টি আচার্যকে জানানোর আশ্বাস দেন দীপু মনি।

শিক্ষামন্ত্রীর এই আশ্বাসের পর শনিবার সন্ধ্যায় আন্দোলন প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে ওইদিন দুপুরে শিক্ষার্থীদের হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন উপাচার্য।

শনিবার আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ার পর এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করা হয়েছিল, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় কার্যক্রমে অংশ নিলে তাদের অবস্থান কী হবে?

এ ব্যাপারে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেছিলেন, গত ২৭ দিন শিক্ষার্থীরা এই উপাচার্যের বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে এরপর তার বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে অংশ নেওয়া লজ্জার। আমরা চাই তিনি চলে যাক। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ব্যাহত হোক তাও আমরা চাই না। শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়ুক তাও চাই না।

শিক্ষামন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন উপাচার্যের বিষয়ে আচার্যকে জানাবেন। জাফর ইকবাল স্যারও আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা তাদের আশ্বাসে ভরসা রাখতে চাই। আমরা আশা করি আচার্য দ্রুত এই উপাচার্যের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।