logo
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৭:০০
বিপিএল
খুলনার বিদায়, কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রাম
ক্রীড়া প্রতিবেদক

খুলনার বিদায়, কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রাম

হারলেই বিদায়। জিতলে সুযোগ থাকবে ফাইনালে যাওয়ার। এমন সমীকরণের ম্যাচ সাধারণত হয় ডু অর ডাইয়ের মতো। লড়াইটা হয় দেখার মতো। হলোও তাই। সোমবার বিপিএলের এলিমিনেটরের ম্যাচটি রূপ নিয়েছিল তাই বেশ উত্তেজনার। টান টান উত্তেজনার পর শেষ হাসি হেসেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। হেরে বিদায় নিয়েছে খুলনা টাইগার্স।

মিরপুরে এই ম্যাচে ব্যাটারদের লড়াই ছিল দেখার মতো। আগে ব্যাট করতে নামা চট্টগ্রামের হয়ে ঝড় তোলেন ক্যারিবীয় চাডউইক ওয়ালটন। তার অপরাজিত ৮৯ রানের সুবাদে বিশ ওভারে ৫ উইকেটে ১৮৯ রান তোলে চট্টগ্রাম। জবাবে খুলনার হয়ে ব্যাট হাতে শেষ পর্যন্ত লড়লেন ফ্লেচার। খেলেন ৮০ রানের ঝড়ো ইনিংস। শেষের দিকে খন্ড ঝড় তুললেন ইয়াসিরও। তবে কাজ হয়নি। খুলনা থামে শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ১৮২ রানে। ৭ রানের জয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে নাম লেখায় চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ৪৪ বলে ৮৯ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলার সুবাদে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন চট্টগ্রামের ওয়ালটন।

চ্যালেঞ্জিং টার্গেটে খেলতে নেমে খুলনার হয়ে শুরুটা দারুণ করেন ক্যারিবীয় ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার। তবে আরেক প্রান্তে থাকা মেহেদী হাসান এদিন জ¦লে উঠতে পারেননি। দলীয় ২১ রানে তিনি বিদায় নেন। নাসুমের বলে ক্যাচ দেন ওয়ালটনের হাতে। ৪ বলে তিনি করেন মাত্র ২ রান। টিকতে পারেননি সৌম্য সরকারও। ফ্লেচার রানের গতি বাড়াতে থাকলেও দলীয় ৪৩ রানের মাথায় মৃত্যুঞ্জয়ের বলে আকবরের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ২ বলে এক রান করেন তিনি।
এরপর যোগ্য জুটি পেয়ে যায় খুলনা। ফ্লেচারের সঙ্গে মুশফিক ছিলেন বেশ ছন্দে। তাতে খুলনার জয়ের আশাও জাগতে থাকে। এই জুটি দলকে নিয়ে যান ১০৭ রান পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত এই জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান। ২৯ বলে ৪৩ রান করা মুশফিককে ফেরান তিনি। এক চারের পাশাপাশি মুশফিক হাঁকান চারটি ছক্কা।

মুশফিকের বিদায়ের পর হাল ধরেন তরুণ ইয়াসির আলী। ধুম ধাড়াক্কা কয়েকটি ছক্কায় ম্যাচের চিত্র অনেকটাই বদলে দেন তিনি। কিন্তু ১৯তম ওভারে তিনি বিদায় নিলে ভাটা পড়ে খুলনার জয়ের আশা। শেষ ছয় বলে দরকার ছিল ১৬ রান। সেই সমীকরণ মেলাতে পারেননি পেরেরা ও ফ্লেচার। ২৪ বলে ৪৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন ইয়াসির। তার ইনিংস সাজানো দুটি চার ও চারটি ছক্কায়।

দল জয় না পেলেও দারুণ ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ফ্লেচার। ৫৮ বলে তিনি খেলেন ৮০ রানের ঝকঝকে ইনিংস। ছয়টি চারের পাশাপাশি তিনি হাকান চারটি ছক্কা। ৪ বলে তিন রানে অপর অপরাজিত ব্যাটার থিসারা পেরেরা। বল হাতে চট্টগ্রামের হয়ে মিরাজ দুটি, নাসুম, শরিফুল ও মৃত্যুঞ্জয় একটি করে উইকেট নেন।

এর আগে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি চট্টগ্রামের। উইল জ্যাকস অসুস্থ থাকায় ওপেন করেন কেনার লুইস ও জাকির হোসেন। প্রথম ওভারে কেনার লুইস তোলেন ১২ রান। এই ওভারের শেষ বলে গোল্ডেন ডাক মারেন জাকির। খালেদের বলে ক্যাচ দেন ফ্লেচারের হাতে। দলীয় ১৬ রানে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক আফিফ হোসেন ধ্রুব। তিন বলে তিন রান করে রুয়েল মিয়ার বলে উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।

এরপর চাডউইক ওয়ালটনের সঙ্গে এগিয়ে চলেন কেনার লুইস। দলীয় ৫৪ রানে এই জুটি ভাঙেন নাবিল সামাদ। এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন লুইস। তার আগে করে যান ৩২ বলে চারটি চার ও দুই ছক্কায় ৩৯ রান। এরপর হার্ড হিটার শামীমও দ্রুত ফিরলে হাল ধরেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও ওয়ালটন। মিরাজ ধীর গতিতে আগালেও ওয়ালটন ছিলেন মারমুখি।

এই জুটিই দলকে নিয়ে যায় চ্যালেঞ্জিং স্কোরে। বিশতম ওভারে দলীয় ১৮০ রানের মাথায় ভাঙে এই জুটি। খালেদের ব,লে বোল্ড হয়ে ফেরেন মিরাজ। ৩০ বলে করেন ৩৬ রান। দুটি চারের পাশাপাশি হাকান একটি ছক্কা। তিন বলে এক ছক্কায় ৮ রানে অপরাজিত থাকেন বেনি হাওয়েল। তবে দুর্দান্ত ঝড়ো ইনিংস খেলেও অপরাজিত থাকেন ওয়ালটন। মাত্র ২৮ বলে ফিফটি করার ওয়ালটন ক্রিজ ছাড়েন ৮৯ রানে নট আউট থেকে। ৪৪ বলের নয়নাভিরাম ইনিংসে তিনি হাঁকান সমান সাতটি করে চার ও ছক্কা। বল হাতে খুলনার হয়ে সবাই রান দিয়েছেন। খালেদ দুটি, নাবিল, রুয়েল ও মেহেদী নেন একটি করে উইকেট।

বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে মাঠে নামবে চট্টগ্রাম। সেখানে চট্টগ্রামের প্রতিপক্ষ প্রথম কোয়ালিফায়ারে হেরে যাওয়া (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স অথবা ফরচুন বরিশাল) দল।