খুলনায় ২২ কোটি ৫০ লাখ টাকার কোকেন ধ্বংস করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে আদালত চত্বরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামানের উপস্থিতিতে এই কোকেন ধ্বংস করা হয়। জুডিশিয়াল আদালতের মালখানার সাব-ইন্সপেক্টর আমির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ১১ আগস্ট রাত পৌনে ১০টার দিকে র্যাব-৬ খুলনার একটি টিম নগরীর হাদিস পার্কের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় ওই টিমের সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে ময়লাপোতা মোড়ের পাশে একটি চক্র মাদক কেনাবেচা করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে তারা সেখানে পৌঁছালে কয়েকজন পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় সোহেল রানা নামে একজনকে আটক করতে সক্ষম হয় র্যাব সদস্যরা।
পালানোর কারণ জানতে চাইলে সোহেল জানায়, তার কাছে কোকেন আছে। র্যাব কর্মকর্তারা সেখান থেকে ২৩০ গ্রাম কোকেন উদ্ধার করে। যার অনুমানিক মূল্য দুই কোটি ৩০ লাখ টাকা।
সোহেলের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নগরীর গগনবাবু রোডের একটি বাড়ি থেকে কোকেন বিক্রির মূল হোতা আরিফুর রহমান ছগিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ছগিরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দাকোপ উপজেলায় রাত তিনটার দিকে অভিযান চালিয়ে বিকাশচন্দ্র মণ্ডল ও ফজলুর রহমান ফকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নগরীর টুটপাড়ায় অভিযান চালিয়ে এস এম এরশাদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর রূপসা উপজেলার রাজাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিকাশচন্দ্র বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনটি কোকেনের প্যাকেট বের করে দেন তিনি। যার মধ্যে ২ কেজি ২০ গ্রাম কোকেন পাওয়া যায়। সোয়া দুই কেজি কোকেনের মূল্য ২২ কেটি ৫০ লাখ টাকা।
এ ঘটনায় র্যাব কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে রূপসা থানায় মাদক আইনে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর আদাল একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও আরও পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।
খুলনার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দুইজন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ে আসামি বিকাশচন্দ্র বিশ্বাসকে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া সোহেল রানাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা, ছগিরকে ১৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং বিকাশচন্দ্র মণ্ডল, এরশাদ ও ফজলুর রহমান ফকিরকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।