বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে কে বসবেন' তা আপাতত নিষ্পত্তি হবে হাইকোর্টে। তবে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে চেম্বার বিচারপতির আদালতের দেওয়া আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে নিপুণ আক্তারের করা আবেদন নিষ্পত্তি করে গতকাল সোমবার এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। আদালত বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে রুল নিষ্পত্তি হবে হাইকোর্টে। আর হাইকোর্টে রুল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত চেম্বার বিচারপতির স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।
এদিকে জায়েদ খানের করা রিট আবেদনে জারি করা রুলের ওপর বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ মঙ্গলবার শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে। নিপুণকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণার সিদ্ধান্ত স্থগিত এবং জায়েদকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনে কোনো বাধা না দিতে হাইকোর্ট গত ৭ ফেব্রæয়ারি আদেশ দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে অভিনেত্রী নিপুণের করা নিয়মিত লিভ টু আপিল আবেদনের ওপর সোমবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগে শুনানির দিন ধার্য ছিল।
এদিন সকালে শুনানির শুরুতেই নিপুণের আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ হাইকোর্টের আদেশ তুলে ধরে বলেন, শিল্পী সমিতি একটি বেসরকারি সংগঠন। এ সংগঠনের রিট করার এখতিয়ার নেই। আর এ রিটের ভিত্তিতে হাইকোর্ট আদেশ দিতে পারেন না। তিনি বলেন, হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন চেম্বার বিচারপতি। তিনি বলেন, এছাড়া হাইকোর্ট যে রুল জারি করেছিলেন, সে রুলের ওপর মঙ্গলবার (আজ) শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে। তিনি বলেন, জায়েদ খানের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ থাকার পরও নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেয়নি। এ কারণে আপিল বোর্ড পদক্ষেপ নিয়েছে। এরপর জায়েদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম বলেন, ফল ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর আপিল বোর্ডও কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। এরপর আইনে নির্ধারিত সময়সীমার পরে যেয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর আপিল বোর্ডকে কোনো দায়িত্ব দিতে পারে না। সমাজসেবা অধিদপ্তরের চিঠির ভিত্তিতে আপিল বোর্ড জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে, যা বেআইনি। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে হাইকোর্টে রুল নিষ্পত্তির আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়েছে দুই সপ্তাহ আগে গত ২৮ জানুয়ারি। ভোটের ফল ঘোষণা হয় ২৯ জানুয়ারি। ভোট গণনা শেষে ইলিয়াস কাঞ্চনকে সভাপতি ও জায়েদ খানকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে জায়েদকে বিজয়ী ঘোষণা করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন নিপুণ। তিনি ফল ঘোষণায় কারচুপির অভিযোগ আনেন। এরপর ওই ফল বাতিল চেয়ে আপিল বোর্ডের কাছে আবেদন করেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২ ফেব্রæয়ারি সমাজসেবা অধিদপ্তর আপিল বোর্ড গঠন করে। এ আপিল বোর্ড গত ৫ ফেব্রুয়ারি জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বি তায় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিজয়ী ঘোষণা করে। এরপর ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণ শপথ নিয়ে সমিতির চেয়ারে বসেন। এ অবস্থায় হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন জায়েদ। এ রিট আবেদনে হাইকোর্ট আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে নিপুণের করা আবেদনে গত ৯ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত এবং সাধারণ সম্পাদক পদের ওপর উভয়পক্ষকে স্থিতিবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন।