logo
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১১:১৫
হাওরে শীতসহিষ্ণু ধান উদ্ভাবন
আমীর হামজা, হবিগঞ্জ

হাওরে শীতসহিষ্ণু ধান উদ্ভাবন

হবিগঞ্জে হাওর এলাকায় আবাদ করা হচ্ছে নতুন জাতের ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০’। ছবি ভোরের আকাশ

তিন বছরে একবার আগাম বন্যায় তলিয়ে যায় হাওর এলাকার ধান। আবার আগাম চাষ করলে শীতের কবলে পড়ে ধান হয়ে যায় চিটা। এসব কারণে নিঃস্ব হয়ে পড়েন কৃষক। হবিগঞ্জসহ হাওর এলাকার কৃষকের এ চিত্র বদলে দিতে এবার নতুন ধানের জাত ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০’ উদ্ভাবন হয়েছে। নতুন উদ্ভাবিত এ জাত যেমন শীতসহিষ্ণু, তেমনি ফলনও আশানুরূপ হবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট নতুন এ জাত উদ্ভাবনে কাজ করে, যা পরীক্ষণ প্লট পরিদর্শন হচ্ছে হবিগঞ্জের নাগুড়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে। নতুন এ জাতের ধানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০’।

সম্প্রতি পরীক্ষণ প্লট পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবির ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. জীবনকৃষ্ণ বিশ্বাস। এ সময় তারা নতুন এ জাতের ব্যাপক সম্ভাবনার কথা জানান।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবির বলেন, ‘প্রতি তিন বছরে একবার মার্চ মাসের চৈতালি ঢল আর এপ্রিল মাসের বৈশাখী ঢলে হাওর এলাকার ফসল তলিয়ে যায়। আবার আগাম চাষ করলে শীতের কবলে পড়ে ধানে চিটা হয়ে যায়। এ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট নতুন জাত উদ্ভাবনের কাজ শুরু করে। এতে তাদের সফলতা এসেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ইতোমধ্যে এর পরীক্ষণ প্লট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কিশোরগঞ্জের নিকলীর হাওর, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা বাকাটিয়ার হাওর, বানিয়াচং উপজেলার মকার হাওর, নবীগঞ্জ উপজেলার গুঙ্গিয়াজুরী হাওর, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর হাওর, শনির হাওর ও মাটিয়ান হাওর।’


শাহজাহান কবির বলেন, ‘আপনারা জানেন, হাওরে কৃষক বেশি ফলন চান। তারা প্রতি হেক্টরে ৭ থেকে ৮ টন ফলন চান। সেই হিসাবে এ ধান হেক্টরপ্রতি ৭ টন ফলন হবে। আমরা এ ধান নিয়ে আরো গবেষণা করব' যেন এর ফলন ৮ থেকে ৯ টন বা ১০ টনে নিয়ে যাওয়া যায় সেই চেষ্টা থাকবে। এছাড়া পর্যায়ক্রমে আরো কয়েকটি জাত অবমুক্ত করা হবে' যেগুলোর ফলন আরো বেশি হবে।’

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো মোজাম্মেল হক বলেন, ‘পরীক্ষণ ফিল্ডে নতুন এ জাতের বেশ কয়েকটি লাইন দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। তাই এ জাত নিয়ে আমরা বেশ আশাবাদী। শিগগরিই এ ধান নতুন জাত হিসেবে অবমুক্ত করা হবে। এতে হাওরের কৃষক উপকৃত হবেন।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ জাতের ফসলের মেয়াদ হবে ব্রি-২৮ ধানের মতো ১৫০ দিন। শীত সহনীয় হওয়ায় অক্টোবরেই এর বীজতলা তৈরি করা যাবে। এতে শীতে বীজতলার কোনো ক্ষতি হবে না।’