প্রথমে লতা মঙ্গেশকর। তারপর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। বুধবারের সকাল হল বাপ্পি লাহিড়ির প্রয়াণের খবরে। কিছুক্ষণ আগেও মানুষটা ছিলেন! হঠাৎই নেই। ‘ছিলেন’ বলতে গিয়ে জিভ জড়িয়ে যাচ্ছে আমার। অদ্ভুত প্রাণবন্ত এক মানুষ ছিলেন তিনি।
কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী বাপ্পি লাহিড়ীর মৃত্যুতে এভাবেই নিজের আবেগ প্রকাশ করলেন হিন্দী চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম সঙ্গীতপরিচালক শান্তনু মৈত্র।
শান্তনু বলেন, বাপ্পিদাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। আমার প্রতিটি গানের সুর উনি শুনেছেন। তাই নিয়ে আলোচনাও করতেন। ভাল লাগলেই প্রথম কথা ছিল, এক দিন বাড়িতে চলে এস। জমিয়ে খাওয়া দাওয়া হবে। কোনোটা খারাপ লাগলে নরম করে বুঝিয়ে দিতেন। তার সঙ্গে গানের রিয়্যালিটি শো-তে বিচারক হয়েছি। প্রতিযোগীরা তার যেন সন্তানের মতো। সারাক্ষণ প্রশংসা করে ওদের মনের জোর বাড়াতেন।
বাপ্পি লাহিড়ীর গান প্রসঙ্গে শান্তনু বলেন, বাপ্পিদার চরিত্রের ছায়া তার গানে। তার গান মানেই সেখানে নানা বাদ্যযন্ত্র আর অফুরন্ত প্রাণশক্তি। বাপ্পিদার গানের ছন্দে পা মেলাতে গিয়ে নতুন স্টেপ আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন স্বয়ং অমিতাভ বচ্চন। পরে যা কাল্ট হয়ে যায়। ‘নমকহালাল’ ছবির ‘পগ ঘুঙরু বান্ধ’ গানের দৃশ্যটাই ভাবুন। এটাই বাপ্পি লাহিড়ি।
বাপ্পি লাহিড়ীর গানের প্রশংসায় শান্তনু বলেন, একই ভাবে সাত সুর তার গলায় যেন বশ মানত। ভারী মিঠে গলা। বাপ্পিদা না থাকলে মিঠুন চক্রবর্তীকে কেউ আবিষ্কার করতে পারতেন না। হিন্দিতে উনিই ছিলেন ‘ডিস্কো কিং’। ‘আই অ্যাম এ ডিস্কো ড্যান্সার’, বা ‘ইয়াদ আ রহা হ্যায় তেরা প্যায়ার’ তার জলজ্যান্ত উদাহরণ। আরতি মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠে ‘তখন তোমার একুশ বছর বোধহয়’.... বাপ্পিদা ছাড়া আর কারও মাথাতেই আসেনি! হিন্দি থেকে বাংলা- সব মাধ্যমেই গান, সুরের জগতে অদ্ভুত বৈচিত্র্য এনেছিলেন। শুধু মিঠুন নন, বাপ্পিদা সব সময়ে নতুন নতুন প্রতিভা আবিষ্কার করতেন।
কিংবদন্তি শিল্পীদের একের পর এক প্রয়াণে জায়গাগুলো শূণ্য হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে শান্তনু বলেন, একের পর এক রথী-মহারথীরা বিদায় নিচ্ছেন। আমরা যোগ্য উত্তরসূরী হয়ে এই অভাব পূরণ করতে পারব তো?
সূত্র: আনন্দবাজার।