logo
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৬:৫১
কলাবাগানে কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দিহানের বিচার শুরু
আদালত প্রতিবেদক, ঢাকা

কলাবাগানে কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দিহানের বিচার শুরু

ইফতেখার ফারদিন দিহানকে বুধবার আদালতে হাজির করা হয়। ছবি- ভোরের আকাশ

রাজধানীর কলাবাগানে মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে করা মামলায় তার কথিত বন্ধু ইফতেখার ফারদিন দিহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন ঢাকার একটি আদালত। এর মধ্য দিয়ে মামলায় দিহানের বিচার শুরু হলো।

আলোচিত এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আফরোজা ফাহানা আহমেদ অরেঞ্জ ভোরের আকাশকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, বুধবার দিহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আগামী ১৬ মার্চে সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ দিয়েছেন ৭ নম্বর নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক জুলফিকার হায়াত। মামলার অভিযোগপত্রে রাষ্ট্রপক্ষে ৫৫ জন সাক্ষী রয়েছেন।

কাঠগড়ায় দাঁড়ানো দিহানকে তার বিরুদ্ধে গঠন করা অভিযোগ পড়ে শোনানো হলে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান।

এ সময় দিহানের পক্ষে অব্যাহতি আবেদনের শুনানি করেন আইনজীবী মো. বোরহান উদ্দিন। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘পারস্পরিক সম্মতিতে তারা মিলিত হন। কোনো জবরদস্তি সেখানে হয়নি। নিহতের যৌনাঙ্গে কোনো বীর্যের দাগ ছিল না বলে চিকিৎসা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। যৌন নিপীড়নের জন্য ভিকটিমের মৃত্যু হয়নি, ডাক্তারের অবহেলার কারণে মৃত্যু হয়েছে। সুতরাং আসামি অব্যাহতি পাবেন।’

রাষ্ট্রপক্ষের আরেক আইনজীবী এস.এম. সবুর শুনানিতে বলেন, ‘ভিকটিমের বয়স ১৭ বছর, যা তদন্ত কর্মকর্তা ভিকটিমের সব সনদপত্র বিশ্লেষণ করে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন। এরূপ ঘৃণিত অপরাধ যাতে না ঘটে সেজন্য দৃষ্টান্তমূলক সাজা হওয়া দরকার। ঘটনাটি সমাজ ও দেশের জন্য লজ্জাজনক। তাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হওয়া জরুরি।’

শুনানি শেষে বিচারক অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে দিহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। দিহানের আইনজীবী ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহার চাইলে বিচারক তা নথিভুক্ত করেন। এর আগে তদন্ত করে দিহানের তিন বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

গত বছরের ৮ নভেম্বর মামলায় শুধু দিহানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক খালেদ সাইফুল্লাহ।

অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, গত বছরের ৭ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। এক ঘণ্টা পর তার বাবাও ব্যবসায়িক কাজে বাসা থেকে বের হন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ওই শিক্ষার্থী তার মাকে ফোন করে কোচিং থেকে পড়ালেখার ‘পেপার্স’ আনার কথা বলে বাসা থেকে বের হন।

মামলার একমাত্র আসামি ‘ও’ লেভেল পড়ুয়া শিক্ষার্থী দিহান দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে ফোন করে ওই শিক্ষার্থীর মাকে বলেন, আপনার মেয়ে আমার বাসায় এসেছিল। হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়ায় তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়েছে।

দিহানের এই ফোন পেয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা অফিস থেকে বের হয়ে দুপুর ১টা ৫২ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছান।

হাসপাতাল কর্মচারীদের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, দিহান তার কলাবাগান ডলফিন গলির বাসায় ডেকে নিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে অচেতন হয়ে পড়লে বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য দিহান নিজেই তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যান।

মেয়েটিকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ এনে পরদিন গত বছরের ৮ জানুয়ারি কালবাগান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করেন তার বাবা।