logo
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৩:৩৮
‘সায়েন্স ফিকশন, উপন্যাসের পাঠক বেশি
তরুণ লেখকদের বই কম আসছে
ইফ্ফাত শরীফ

‘সায়েন্স ফিকশন, উপন্যাসের পাঠক বেশি

বইপ্রেমীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। ছবিটি বুধবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে তোলা। ভোরের আকাশ

এবার বইমেলায় উপস্থিতি সন্তোষজনক। তাই দ্বিতীয় দিন থেকেই জমে উঠেছে মেলা। স্টলগুলোতে বেচা-বিক্রি হওয়াতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন প্রকাশকরাও।

গতকাল বুধবার মেলা ঘুরে দেখা যায়, উপন্যাস, গল্প এবং গবেষণাধর্মী বইয়ের পাঠক বেশি। সে তুলনায় কবিতার বইয়ের পাঠক একেবারেই কম। কবিতার পাঠক কম থাকার কারণ হিসেবে পাঠক এবং প্রকাশকরা বলেছেন, আগের কবিতাগুলোর যে ছন্দ বা তাল ছিল এখন যেন সবকিছু হারিয়ে গেছে। কবিতায় আগে যে ভাষার প্রয়োগ ছিল এখন সেগুলো দেখা যাচ্ছে না।

তবে প্রকাশকরা মনে করছেন, আগের মতো কবিতার মান যদি ভালো হয় তাহলে অবশ্যই সাড়া পাওয়া যাবে।

যদিও নামকরা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বেশি ঠাঁই পাচ্ছে নামিদামি লেখক এবং কলামিস্টদের বই। মেলায় ঘুরে সাধারণ পাঠকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাঠকদের বইয়ের পছন্দের তালিকার শীর্ষে হচ্ছে ‘সায়েন্স ফিকশন, উপন্যাস ও হুমায়ুন আহমেদের বইগুলো। মেলায় ইসরাত জাহান নীলা তার ছোট মেয়েকে নিয়ে এসেছেন। তিনি মেলা ঘুরে কিনেছেন রূপকথার কয়েকটি গল্পের বই। কথা হয় নীলার সঙ্গে।

তিনি বলেন, মেলায় এসেছি বাচ্চাকে নিয়ে ঘুরতে। নিজের ও বাচ্চার জন্য কিছু বই কিনতে। তবে মেলায় একসঙ্গে সহজে যত রকমের বই পাওয়া যায়, বছরের অন্য সময়ে দুর্লভ এই বইগুলো পেতে কিছুটা বেগ পেতে হয়। যে কারণে বইমেলায় বই কেনার প্রবণতাটা একটু বেশি থাকে।

এবারের মেলায় নতুন লেখকদের বই একেবারেই কম দেখা গেছে। এর কারণ হিসেবে প্রকাশকরা বলছেন, বেশির ভাগ প্রকাশনীর সম্পাদনা বোর্ড থাকে। বইয়ের মানের ওপর নির্ভর করে সম্পাদকরা সিদ্ধান্ত নেন কোন বই প্রকাশ করবেন। তবে প্রকাশকরা বলছেন, যদি তরুণ কোনো লেখক মানসম্মত বই লিখেন, তাহলে অবশ্যই সেগুলোর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

কথাপ্রকাশ প্রকাশনার কর্তব্যরত কর্মকর্তা রাফি খান ভোরের আকাশকে জানান, এবারের বই মেলা আশা করছি, গতবারের থেকে ভালো হবে। গত দুই দিনে মেলায় যেভাবে লোকজন এসেছে তাতে মনে হচ্ছে এ বছর বেচা-বিক্রি ভালো হবে। এক মাস মেলা হলে আমাদের জন্যই ভালো হবে।

তিনি বলেন, যারা আসার তারা আসবেনই, দেরি হলেও আসবেন এবং পরে হলেও আসবেন। মূলত পাঠকরাই আসবেন এবং বই কিনবেন। আমাদের এখানে চাহিদা বেশি শিশুদের সায়েন্স ফিকশন বইগুলোর। এর সঙ্গে উপন্যাসের পাঠকও অনেক।

এবার কথা প্রকাশনীতে বেশকিছু নতুন বই এসেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বইয়ের মধ্যে রয়েছে, লেখক আফসান চৌধুরীর বই ‘১৯৭১ : পাকিস্তান প্রাঙ্গণ’ যার মূল্য ৪০০ টাকা। কবি নির্মলেন্দু গুণের ‘একুশে ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের কবিতা’ মূল্য ৪০০ টাকা। ভীষ্মদেব চৌধুরীর বই ‘জনান্তিকের মুক্তিযুদ্ধ’ মূল্য ২৫০ টাকা। আন্দালিব রাশদীর বই ‘উনিশ শত একাত্তর’ মূল্য ৩০০ টাকা। সালেক খোকনের বই ‘১৯৭১ : বিজয়ের গৌরবগাথা’ মূল্য ৪০০ টাকা। সুলতান মাহমুদের লেখা বই ‘মুক্তিযুদ্ধ : প্রস্তুতি থেকে বিজয়’ মূল্য ৪০০ টাকা।

কথা প্রকাশের নতুন প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য উপন্যাস-গল্পের বইয়ের মধ্যে রয়েছে, হরিশংকর জলদাসের উপন্যাস ‘দুর্যোধন’ মূল্য ৪০০ টাকা। আফসানা বেগমের গল্প ‘মুখোশের আড়ালে’ মূল্য ২৫০ টাকা। বিশ্বজিৎ চৌধুরীর গল্প ‘শাহজাদীর শয্যা’ মূল্য ২৫০ টাকা। ইকবাল আখতারের উপন্যাস ‘দ্রোহী’ যার মূল্য ২৫০ টাকা। আখলাক জামানের সম্পাদিত গল্প ‘মনের খেলাঘর’ মূল্য ২৫০ টাকা। কামরুল আহসানের লেখা উপন্যাস ‘জিজীবিষা’ মূল্য ২৫০ টাকা। কবীর রানার গল্প ‘মেয়াদোত্তীর্ণ নিরাপত্তাসমূহ’ মূল্য ২৫০ টাকা। স. ম. শামসুল আলমের উপন্যাস ‘সিমেন এনালাইসিস’ মূল্য ২৫০ টাকা। চলচ্চিত্র-সংস্কৃতিবিষয়ক তারেক মাসুদের বই ‘চলচ্চিত্রযাত্রা’ মূল্য ৪০০ টাকা।