চলছে ফাল্গুন মাস। শীতের তীব্রতাও কিছুটা কমেছে। এরই মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কিছু এলাকায় আমগাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। মুকুলের মিষ্টি সুবাসে আন্দোলিত মানুষের মন। আর আমচাষিরা এরই মধ্যে বাগানের পরিচর্যা শুরু করেছেন।
জেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে আমগাছে আগাম মুকুল শোভা পাচ্ছে। বিশেষ করে কানসাট এলাকায় আমের মুকুলে এখন মৌমাছির গুঞ্জন। মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ কাছে টানছে। গাছের প্রতিটি শাখা-প্রশাখায় চলছে ভ্রমরের সুর ব্যঞ্জনা। চারদিক ভরে গেছে আমের মুকুলে।
পুকুরিয়া এলাকার আফসার আলী বলেন, ‘আমি পাঁচ বছর ধরে আম চাষ করি। গত বছর আমার দুই বিঘা আশ্বিনা ও এক বিঘা হিমসাগর আমের বাগান ছিল। প্রথম থেকে পরিচর্যা করতে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। আম বিক্রি করে পেয়েছি প্রায় তিন লাখ টাকা।
‘এবার ওই তিন বিঘা জমির বাগানে ফের পরিচর্যা শুরু করেছি। আগাম মুকুল দেখার পর থেকে মনটা ভালোই লাগছে। এই মুকুল টিকে থাকলে এবার বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে।’
সুন্দরপুর ইউনিয়নের ফরুক আলী বলেন, ‘আমের বাগানে গত ১০ দিন থেকেই আমের মুকুল ফুটতে শুরু করেছে। তাই পরিচর্যাও শুরু করেছি। গত বছর আমার দুই বিঘা জমিতে লক্ষণভোগ আমের বাগান ছিল। সে খাতে আমার খরচ হয়েছিল প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। আর আমের দাম কম হওয়ায় এক লাখ টাকার মতো পেয়েছিলাম।’
আব্বাস বাজার এলাকার হাবিব আলী বলেন, আমার নিজ জমিতে দুই বিঘা হিমসাগর আমের বাগান রয়েছে। তাই বাগান পরিচর্যা করা শুরু করেছি। কিছু গাছে মুকুল এসেছে। ভালো পরিচর্যা হলে সব গাছেই মুকুল আসবে। এই দুই বিঘা জমি থেকে গত বছর প্রায় আড়ায় লাখ টাকার আম বিক্রি করেছিলাম। আর বাগান পরিচর্যায় খরচ হয়েছিল প্রায় ৭০ হাজার টাকা।
জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, চার-পাঁচ বছর ধরে লোকসানের মুখে আম ব্যবসায়ীরা। তবে গত বছর থেকে ব্যবসায়ীরা লাভবান হতে শুরু করেছেন। আর এ বছর বিভিন্ন ধরনের আমগাছ রোপণের ফলে চাষিরা ফের লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
‘এখন পর্যন্ত এ জেলার ১০ শতাংশ গাছে আমের মুকুল এসেছে। আশা করছি ৯০ শতাংশের বেশি গাছে এবার আমের মুকুল ফুটবে’, বলেন নজরুল ইসলাম।