logo
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২২:১৩
হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন
অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচকে পেছাল বাংলাদেশ
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচকে পেছাল বাংলাদেশ

দ্য হেরিটেজ ফাউন্ডেশন

পাঁচ বছর ধরে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার সূচকে উন্নতির ধারা অব্যাহত থাকলেও এবার ১৭ ধাপ পিছিয়ে গেছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান দ্য হেরিটেজ ফাউন্ডেশন প্রকাশিত অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচক-২০২২ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৭৭ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এখন ১৩৭তম অবস্থানে। এই তালিকায় ২০২১ সালের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২০তম।

দ্য হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের দেওয়া তথ্যমতে, ২০২২ সালের সূচকে ৫২ দশমিক ৭ শতাংশ স্কোর পেয়েছে বাংলাদেশ, যা আগের বছরের স্কোর থেকে ২ দশমিক ৫ শতাংশ কম। সূচকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, নাগরিকের শ্রম ও সম্পদের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রত্যেক ব্যক্তির মৌলিক অধিকার।

অর্থনৈতিকভাবে একটি সমাজে প্রতিটি নাগরিক শ্রম ও ব্যবসায় কতটুকু স্বাধীনতা ভোগ করছেন। কর্ম, উৎপাদন, ভোগ এবং যেভাবে খুশি সেভাবে বিনিয়োগ করার স্বাধীনতা পাচ্ছেন কিনা। অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন দেশে শ্রম, পুঁজি এবং উৎপাদিত পণ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাধ্য সরকার। এসব কিছু বিবেচনায় নিয়ে তৈরি করা হয় এই সূচক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতার স্কোর ছিল ১০০ এর মধ্যে ৫২ দশমিক ৭। তার আগের বছর ৫৬ দশমিক ৫ স্কোর নিয়ে ১৮৪ দেশের মধ্যে ১২০তম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। এর আগে ২০২০ সালের এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২২তম। ২০১৯ সালে ছিল ১২১তম। ২০১৮ এবং ২০১৭ সালে এই অবস্থান ছিল একই ১২৮তম।

সবশেষ সূচকে বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নাগরিকের শ্রমের স্বাধীনতা কমে যাওয়ায় আগের বছরের চেয়ে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। তবে নাগরিকের ওপর করের বোঝা কমিয়ে আনা ও বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে সরকারের ব্যয় ছিল প্রশংসনীয়। পাশাপাশি, সম্পত্তির অধিকার প্রতিষ্ঠায় বড় ধরনের বৈষম্য দেখা গেছে এই সূচকে। দলিল-পত্রের জটিলতা ও মানহীন ব্যবস্থাপনা সম্পত্তি হস্তান্তরে ব্যাপক বাধা হয়ে দেখা দিয়েছে।

শ্রমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে গত বছরের তুলনায় বড় ধরনের ছন্দপতন হয়েছে বাংলাদেশে। ২০২০ সালে শ্রম স্বাধীনতা ছিল রেকর্ড ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০২১ সালে তা নেমে আসে মাত্র ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এ বছর বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। নেপাল, পাকিস্তান ও মালদ্বীপের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও ভুটান, ভারত ও শ্রীলঙ্কার পেছনে রয়েছে বাংলাদেশ। যদিও ২০২১ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল কেবল ভুটানের পরে, দ্বিতীয় অবস্থানে। এবার ৯৪তম অবস্থানে থাকা ভুটান দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ যা প্রথম ১০০ দেশের তালিকায় রয়েছে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশের সরকারের নেওয়া মানহীন ও বিচ্ছিন্ন নীতিমালার কারণে এ বাবের সূচকে বৈশ্বিক গড় স্কোর কিছুটা কমেছে। এবারের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচকের গড় হচ্ছে ৬০ শতাংশ। আগের বার এর গড় ছিল ৬১ দশমিক ৬ শতাংশ। বাংলাদেশের অবস্থান বৈশ্বিক গড়ের নিচে।

অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচকে ৮০-এর বেশি স্কোর করে শীর্ষ সঙ্গে রয়েছে সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও লুক্সেমবার্গ। সূচকে এই দেশগুলোকে রাখা হয়েছে ‘পূর্ণ স্বাধীন’ ক্যাটাগরিতে। ‘প্রায় পূর্ণ স্বাধীন’ ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ২৭টি দেশকে।