ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের প্রথম দিনে এক লজ্জায় ডুবেছে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচ শেষে হয়তো সেই লজ্জার ওজনটা আরও ভারি হবে। তেমনই পরিণতির দিকে এগুচ্ছে ম্যাচ। দক্ষিণ আফ্রিকা বোলার ও ব্যাটাররা তেমনই আশঙ্কা জোরালো করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাদের বোলারদের ব্যর্থতার কিউই ব্যাটাররা রান উৎসব করেছে। সে সুবাদে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে রানের পাহাড় গড়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার ৯৫ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে তারা ৪৮২ রান করেছে। ফলে প্রথম ইনিংসে প্রোটিয়ারা ৩৮৭ রানে পিছিয়ে পড়ে। দ্বিতীয় দিন শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ উইকেটে ৩৪ রান করেছে। ফলে ব্যবধান কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫৩ রানে।
রান উৎসবের মাঝে নিউজিল্যান্ডের হতাশাটা কম নয়। না প্রাপ্তির হতাশা একটু তাদের থাকতেই পারে। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা এতটা সাদামাটা বোলিং করেছেন যে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটারদের ওপর তারা কোনো প্রভাবই ফেলতে পারেনি। তাদেরকে এতটাই সাবলীলভাবে মোকাবিলা করেছে যে, নিউজিল্যান্ডের শেষ উইকেট জুটিই একটুর জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসকে টপকে যেতে পারেনি। শেষ উইকেটে নিউজিল্যান্ড স্কোর বোর্ডে ৯৪ রান জমা করে। আর পুরো ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৯৫।
নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে একটা সেঞ্চুরি ও দুটো হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে। তবে ৪৫ উর্ধ্ব ইনিংসের সংখ্যা পাঁচ। এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো নিউজিল্যান্ডের ব্যাটাররা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এমন কীর্তি গড়লো। তবে সব অর্জনকে এ ম্যাচে ছাপিয়ে গেছেন ম্যাট হেনরি। ৭ উইকেট নিয়ে প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা বিধ্বস্ত করতে মূল ভূমিকা রেখেছেন। আর এ ইনিংসে শেষ ব্যাটার হিসেবে তো ৫৮ রান করেছেন।
নিউজিল্যান্ডের রান উৎসবে নেতৃত্ব দিয়েছেন হেনরি নিকোলস। ক্যারিয়ারের অষ্টম টেস্ট সেঞ্চুরির (১০৫) দেখা পেয়েছেন তিনি। নার্ভাস নাইনটিজের হতাশায় ডুবেছেন টম ব্লান্ডেল। ৯৪ রানে ইতি হয়েছে তার ইনিংসটি। আর ম্যাট হেনরি করেছেন দলের হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান। ৫৮ রান করে তিনি ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছেন। সাত উইকেট নেওয়ার পর প্রথম এগার নম্বর ব্যাটার হিসেবে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। এছাড়া নিল ওয়াগনার ৪৯ ও কলিন ডি গ্রান্ডহোম ৪৫ রান করেছেন।
অবশ্য নিউজিল্যান্ডের রান উৎসবে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের অবদানও কম নয়। অন্তত সাতটি ক্যাচ ছেড়েছে তারা। এর মধ্যে সেঞ্চুরিয়ন নিকোলসের ক্যাচ ছেড়েছে দুইবার। প্রথমবার যখন নিকোলস জীবন পেয়েছেন তখন তার রান ৫। আর নিকোলস দ্বিতীয়বার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন ২৪ রানে। টিম সাউদি ৪ রান করতেই জীবন পেয়েছেন দুইবার।
বোলার নিয়েও দক্ষিণ আফ্রিকার দুঃশ্চিন্তা কম নয়। ইনজুরির কারণে লুঙ্গি এনগিডি বাইরে থাকায় চাপ নিতে হচ্ছে কাগিসো রাবাদাকে। তাছাড়া দলে একজন স্পিন বিশেষজ্ঞ না থাকায় ঝামেলাটা আরও বেড়েছে।
দ্বিতীয় ইনিংসেও দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা সেই ব্যর্থতার পথে হেঁটে চলেছেন। দ্বিতীয় দিন শেষ হওয়ার আগে তারা ৩ উইকেট হারিয়েছে। স্কোরবোর্ডে জমা করেছে মাত্র ৩৪ রান। শুরুর অবস্থা এতটাই নাজুক ছিল যে, মাত্র ৪ রানে ফিরে গেছে তাদের শীর্ষ তিন ব্যাটার। দুই ওপেনার রানের খাতা খুলতে পারেননি। আর এইডেন মারক্রাম করেছেন মাত্র দুই রান। রাশি ভান ডার ডুসেন ৯ রানে অপরাজিত রয়েছেন। তার সঙ্গে থাকা টেম্বা বাভুমার সংগ্রহ ২২ রান। টিম সাউদি দুই উইকেট নিয়েছেন। আর ম্যাট হেনরি আবার তার উইকেট শিকার শুরু করেছেন। দ্বিতীয় দিন শেষে তার উইকেট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আটে।