আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৬ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
এ সময় তিনি বলেন, শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের জন্য নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি থাকবে না। ইউনিফর্ম সদস্যের পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এর পাশাপাশি বোম্ব ডিজপোজাল ইউনিট, ডিবি, র্যাব ও সোয়াট টিম দায়িত্ব পালন করবেন। সবার সমন্বয়ে ৬ স্তরের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শহীদ মিনারে নেওয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, শহীদ মিনারের চারপাশের প্রতিটি রাস্তায় পুলিশের চেকপোস্ট থাকবে। চেকপোস্টের বাইরের এলাকা ও ভেতরের এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে আমরা আলাদা করে বৈঠক করেছি। এখন পর্যন্ত কোনো সংস্থা থেকে কোনো ধরনের ঝুঁকির কথা পাওয়া যায়নি। আমরা কাউকে বাধ্য করতে পারি না, আমরা শুধু অনুরোধ করতে পারি, যারা আসবেন, অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাবেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করতে আসবেন কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে, আমাদের যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তারা আসবেন বিষয়টি মাথায় রেখেই সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শহীদ মিনারের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আধা ঘণ্টা সময় রাখা হয়। তারা চলে যাওয়ার পর সাধারণ জনগণের জন্য শ্রদ্ধা নিবন্ধনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ঐতিহ্যগতভাবে শহীদ মিনার কেন্দ্রিক চারদিকে যে রাস্তাগুলো রয়েছে সবগুলো রাস্তায় পুলিশের আলাদা চেকপোস্ট থাকবে। প্রতিটি এলাকা সিসিটিভির আওতায় থাকবে। যারা শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসবেন তারা পলাশী মোড় দিয়ে শহীদ মিনারে ঢুকবেন। নিরাপত্তা তল্লাশি নিশ্চিত করেই সবাইকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে।
করোনাকালের বিধিনিষেধের কথা মনে করিয়ে দিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ করোনার কারণে যেসব স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন, যারা শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসবেন এবং সম্মানিত নাগরিকদের আমরা বলবো সেই বিধানগুলো যেন মেনে চলা হয়। দিনশেষে কিন্তু আপনি আপনার পরিবারের কাছে ফিরে যাবেন।’
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় ব্যাগ না নিয়ে আসার অনুরোধ জানান তিনি। এছাড়াও প্রত্যেককে নিজ দায়িত্বে সঙ্গে থাকা মোবাইলের ব্যাপারে সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তল্লাশি ও নিরাপত্তা বলয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সোয়াট টিম, বোম ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড দিয়ে পুরো এলাকা তল্লাশি করা হবে। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকেও বিশেষ তল্লাশি করা হবে, যোগ করেন ডিএমপি কমিশনার।
তিনি বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক ব্যানার-ফেস্টুনে যাতে এলাকা নোংরা না হয় সেজন্য সবাইকে অনুরোধ করবো। আর যদি কেউ এসব ব্যানার-ফেস্টুন টানিয়ে থাকেন তাহলে ঢাবি ও ডিএমপি যৌথভাবে সেগুলো অপসারণ করবে।’
ডিএমপি কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম শিক্ষার্থীদেরও সুশৃঙ্খলভাবে শহীদ মিনারে আসার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘উৎসাহের কারণে অনেক ছাত্র-ছাত্রী ভাইবোনেরা উল্টো পথে আসার চেষ্টা করেন এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। জাতি আপনাদের আচরণ থেকে শিক্ষা নেবে, সে বিষয়ে আপনারা একটু সচেতন থাকবেন।’