ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে শিরোপা জেতার অভিজ্ঞতা আছে সাকিব আল হাসানের। কিন্তু নিজ দেশের বিপিএলে নেই একটি শিরোপাও। ফাইনালে উঠলেও অচ্ছুত থেকেছে সোনালি ট্রফি। অথচ বিপিএলে সর্বাধিক টুর্নামেন্ট সেরা প্লেয়ার তিনি। কবে কাটবে সাকিবের বিপিএল শিরোপা হাহাকার?
ফরচুন বরিশালের হয়ে নাম লেখার পর সাকিব বলেছিলেন, এবার বরিশালের হয়ে শিরোপা জেতাই মূল লক্ষ্য তার। সে লক্ষ্যের খুব কাছে গিয়েও পারেননি তিনি। ফাইনালে মাত্র এক রানের জন্য হেরে যায় তার দল। তৃতীয় শিরোপা নিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স যখন উল্লাসে ব্যস্ত, বরিশালের অনেক ক্রিকেটার তখন কাঁদছেন। সাকিবের চোখে জল না দেখা গেলেও ভেতরে ভেতরে পুড়েছেন অনেক, তা দেখেই বুঝা গেছে।
তার দল ফরচুন বরিশাল এবার হয়েছে রানার্স আপ। কিন্তু টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় আবার সাকিবই। আট বিপিএলে চারবার এই খেতাব জিতলেন সাকিব। কিন্তু ট্রফির হিসাবের খাতা শূন্য। সাকিব অবশ্য ম্যাচের পর বলেন, ব্যক্তিগত সাফল্যের চেয়ে দলীয় অর্জনই তার কাছে বেশি কাক্সিক্ষত ছিল। তিনি বলেন, ‘আমার জন্য এটা ভালো টুর্নামেন্ট ছিল। তবে ম্যান অব দ্য সিরিজ হওয়ার চেয়ে ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে পারলেই ভালো লাগত বেশি।’
বিপিএলে সাকিবই সবচেয়ে ধারাবাহিক ক্রিকেটার। যার ব্যাট-বলে আলো জ¦লেছে প্রায় সব সময়। চারবার টুর্নামেন্ট সেরা। অথচ কোনো ক্রিকেটারই এই টুর্নামেন্টে একের বেশি এই পুরস্কার জিততে পারেননি। সেখানে সাকিবের এমন পারফরম্যান্স সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।
এবারের বিপিএলে ব্যাট-বলে আরো বিধ্বংসী ছিলেন তিনি। নিজেকে তুলে নেন রেকর্ড উচ্চতায়। টানা পাঁচ ম্যাচে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়ে গড়েন বিশ্বরেকর্ড। প্রথম কোয়ালিফায়ার ও ফাইনালে ব্যাট হাতে ভালো করতে ব্যর্থ হয়েছেন আবার। তবে বোলিং যথারীতি ছিল ভালো। সব মিলিয়ে ১১ ইনিংসে ১৪৪ দশমিক ১৬ স্ট্রাইক রেটে ২৮৪ রান ও ১৬ উইকেট।
বিপিএলের শুরু থেকেই শুরু সাকিবের জয়যাত্রার। প্রথম আসরে খুলনা রয়্যাল বেঙ্গলস ফাইনাল খেলতে না পারলেও সাকিব টুর্নামেন্ট সেরা হন ১১ ইনিংসে ১৪০ স্ট্রাইক রেটে ২৮০ রান করে ও ১৫ উইকেট নিয়ে।
পরের আসরে ব্যাট হাতে তার সেরা বিপিএল ছিল সেটি। ১২ ইনিংসে ৩২৯ রান করেন ১৬৪ দশমিক ৫০ স্ট্রাইক রেটে। ওভারপ্রতি ৬ দশমিক ২১ রান দিয়ে উইকেট নেন আবারো ১৫টি। পরের তিন আসরে আর সেরা হতে পারেননি সাকিব। ২০১৫ সালে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ইংলিশ অলরাউন্ডার আসহার জাইদি, ২০১৬ আসরে মাহমুদউল্লাহ ও ২০১৭ আসরে ক্রিস গেইল।
সাকিব আবার সেরা হন ২০১৯ আসরে। এবার ১৫ ইনিংসে ৩০১ রান করেন ১১৩ দশমিক ১৫ স্ট্রাইক রেটে। বল হাতে নিজের সেরা আসর কাটান ২৩ উইকেট নিয়ে। এবারের আগে সবশেষ আসরে টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছিলেন আন্দ্রে রাসেল। সাকিব এবার নিজের জায়গাটা আবার ফিরে ফেলেন টুর্নামেন্ট সেরা হয়ে। তবে আফসোস থেকে গেল, একটা শিরোপার জন্য।