logo
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০৯:৫৭
ইজিবাইকের দৌরাত্ম্য
শাহারিয়ার রহমান রকি, ঝিনাইদহ

ইজিবাইকের দৌরাত্ম্য

ঝিনাইদহ পৌর এলাকা। ছবি- ভোরের আকাশ

ঝিনাইদহ শহরে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে ওঠেছে তিন চাকার যান ইজিবাইক। ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্য, যত্রতত্র অবৈধ পার্কিংয়ে বেড়েছে মানুষের চরম দুর্ভোগ। বিশেষ করে সপ্তাহের রোববার ও বৃহস্পতিবার ইজিবাইকের জট মারাত্মক আকার ধারণ করে।

এ সময় যানযট নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই হিমশিম খেতে হয় ট্রাফিক পুলিশদের। একই সঙ্গে ইজিবাইক দুর্ঘটনার সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে।

জানা গেছে, এই তিন চাকার যান ইজিবাইকের নেই কোনো বৈধতা। তারপরও শহর থেকে শুরু করে সড়ক-মহাসড়কেও তাদের একচ্ছত্র দখল। সদর পৌর সভার লাইসেন্সকৃত ইজিবাইকের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার ৬০০।

তবে বাস্তবে পৌর এলাকায় চলাচলকারী ইজিবাইকের সংখ্যা প্রায় সাত হাজারের মতো। পৌর এলাকার পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রাম থেকেও প্রতিদিন ভাড়ায় যাত্রী নিয়ে শহরে চলে আসে ইজিবাইক চালকরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শহরের পোস্ট অফিস মোড়, আরাপপুর, সদর হাসপাতাল গেট, নতুন হাটখোলা রাস্তায় প্রতিনিয়তই লেগে থাকে ইজিবাইকের জট। বিশেষ করে শহরের প্রাণকেন্দ্র পায়রা চত্বরে দিনের অধিকাংশ সময় রাস্তার অর্ধেকটা জুড়েই দাঁড়িয়ে থাকে এসব যান। যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠাতে ব্যস্ত তারা।

ইজিবাইকের এই যানজটে নাকাল হয়ে ওঠেছে পৌরবাসী। অথচ এ সমস্যা সমাধানে মেলে না কর্তৃপক্ষের সুনজর। একই সঙ্গে পৌর এলাকায় ইজিবাইকের পাশাপাশি দেদারছে চলছে আলমসাধু, নসিমন, করিমমন।

অন্যদিকে নিয়ন্ত্রণহীন এসব ইজিবাইকের কারণে প্রতিনিয়তই বাড়ছে ছোট বড় সড়ক দুর্ঘটনা। সদর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের তথ্য মতে, গেল এক বছরে সদর পৌর এলাকায় ৫২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে মারা গেছেন পাঁচজন, আহত হয়েছেন শতাধিক। এই দুর্ঘটনার ৬০ ভাগই তিন চাকার যানের কারণে।

শহরে চলাচলকারী হাসান আলী বলেন, ‘বয়স ৫০ বছর পার হয়েছে। এর মধ্যে ১০ বছর আগেও শহরে এতো যানজট ছিল না। অনেক শান্তিতেই চলাফেরা করতে পারতাম। কিন্তু বর্তমানে শহরে আসলে কষ্ট লাগে। মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়েছে ইজিবাইক। চালকরা সাইড না দিয়ে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠান এবং নামান। এ কারণে হাঁটাচলা করা যায় না। '

শহরের পায়রা চত্বরে ট্রাফিক বক্সের সামনে যাত্রী নামানোর সময় ইজিবাইক চালক মহিতোষ নন্দী বলেন, ‘আমাদের পার্কিংয়ের জায়গা নেই। ফলে বাধ্য হয়ে যাত্রী ওঠানো আর নামানোর জন্য এখানে সেখানে দাঁড়াতে হয়। মাঝে মাঝে ট্রাফিক পুলিশ বাধা দেয়।’

জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, শহরের পায়রা চত্বর, পোস্ট অফিস মোড় সকল স্থানেই সার্জেন্টরা পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ইজিবাইকের জট নিরসনে কাজ করছে।

পৌর প্রশাসক ইয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘একেবারে ইজিবাইক বন্ধ করা সম্ভব না। তবে পর্যায়ক্রমে কিভাবে ইজিবাইকজনিত সমস্যার সমাধান করা যায় সে বিষয়ে আমরা কাজ করব। ইতোমধ্যে আমরা ইজিবাইকের কারণে যেন দুর্ঘটনা না ঘটে সেজন্য ডান সাইড দিয়ে যাত্রী নামানো বন্ধ করতে বেড় (বাধা) তৈরি করে দিতে মাইকিং শুরু করেছি।’