logo
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৩:১৫
ফকির আলমগীরের জন্মদিন আজ

ফকির আলমগীরের জন্মদিন আজ

ফকির আলমগীর।

‘মায়ের একধার দুধের দাম কাটিয়া গায়ের চাম, পাপোশ বানাইলেও ঋণের শোধ হবে না, এমন দরদী ভবে কেউ রবে না।’

এমন দরদভরা গানের মাধ্যমে সারা বাংলার মানুষের কাছে পৌঁছে যান স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ফকির আলমগীর। মানুষ এবং মানুষের জীবন ধারার গানের কারণে তাকে উপাধি দেওয়া হয় গণসঙ্গীত শিল্পী।

সাধারণ মানুষের হৃদয়ের কথাই তার গানে ফুটে ওঠে। জীবনের শুরু থেকেই মানুষের মুক্তির গান, জীবনের গান, প্রাণের গান গেয়ে গণমানুষের সঙ্গে মিশে আপন মনে গান করতেন দেশবরেণ্য এই শিল্পী।

১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেলায় ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে ফকির আলমগীরের জন্ম। আজ তার ৭২তম জন্মদিন।

গণসংগীতশিল্পী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আলমগীর জীবনের বিশেষ দিনে আমাদের মাঝে বেঁচে না থাকলেও গানের মাধ্যমে থাকবেন আজীবন।

২০২১ সালের ২৩ জুলাই রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই শিল্পী। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী ও তিন ছেলে রেখে গেছেন।

ফকির আলমগীর ১৯৭৬ সালে গড়ে তোলেন লোকপ্রিয় ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী। এর মাধ্যমে তিনি গণসঙ্গীতকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেন।

স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সঙ্গীতের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপ গানের বিকাশে ভূমিকা রাখেন এ শিল্পী। সঙ্গীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে ফকির আলমগীরকে একুশে পদক দেওয়া হয়।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার কণ্ঠে বেশ কয়েকটি গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। এর মধ্যে ‘ও সখিনা’ গানটি এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে।

১৯৮২ সালে বিটিভির আনন্দমেলা অনুষ্ঠানে গানটি প্রচারের পর দর্শকদের মাঝে সাড়া ফেলে। গানটি লিখেছেন আলতাফ আলী হাসু। কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি গানটির সুরও করেন ফকির আলমগীর।

গানে গানে জীবনের বেশিরভাগ সময় পার করেছেন ফকির আলমগীর। তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠাতা, গণসঙ্গীত চর্চার আরেক সংগঠন গণসঙ্গীতশিল্পী পরিষদেরও সভাপতি ছিলেন ফকির আলমগীর।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করা ফকির আলমগীর গানের পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখিও করতেন।

‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও বিজয়ের গান’, ‘গণসঙ্গীতের অতীত ও বর্তমান’, ‘আমার কথা’, ‘যারা আছেন হৃদয় পটে’-সহ বেশ কয়েকটি বই রয়েছে তার।