ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে সাগরে প্রচণ্ড ঠান্ডায় সাত বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনায় সন্দেহভাজন এক পাচারকারীকে সিসিলি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ গ্রেপ্তার ব্যক্তি মিশরের নাগরিক বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ৷
গত ২৫ জানুয়ারি নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালির লাম্পেদুসায় পৌঁছাতে গিয়ে প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে হাইপোথারমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সাত বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা যান৷
ভূমধ্যসাগরে মারা যাওয়া সাত বাংলাদেশির পরিচয় প্রকাশ করেছে ইতালির রোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।
তারা হলেন- মাদারীপুর সদর উপজেলার পশ্চিম পিয়ারপুর গ্রামের ইমরান হোসেন ও জয় তালুকদার ওরফে রতন। একই উপজেলার ঘটকচর গ্রামের সাফায়েত ও মোস্তফাপুর গ্রামের জহিরুল। এছাড়া মাদারীপুর সদর উপজেলার বাপ্পী নামের এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা গেলেও তার গ্রামের তথ্য পাওয়া যায়নি। সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার মামুদপুর গ্রামের সাজ্জাদ ও কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার সাইফুল নামের এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা গেলেও তার গ্রামের তথ্য পাওয়া যায়নি।
জার্মানির সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলে সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মর্মান্তিক এই ঘটনায় জড়িত মানবপাচার চক্রের হোতাদের সন্ধানে তদন্ত শুরু করে ইতালির পুলিশ৷
এরই ধারাবাহিকতায় ১৯ ফেব্রুয়ারি ৩৮ বছর বয়সী মিশরীয় নাগরিককে মানবপাচারে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করেছে ইতালির সিসিলি দ্বীপের পুলিশ৷
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি লিবিয়া থেকে ১৬ মিটার দীর্ঘ একটি নৌকায় ২৮৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে ইতালিতে পাচারের চেষ্টা করছিলেন৷ যেসব নৌকায় করে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা যাত্রা করছিলেন সেগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল৷ আর সেই সময় সাগরের তাপমাত্রা ছিল শূন্য ডিগ্রির কাছাকাছি৷
এমন পরিস্থিতিতে ‘অভিবাসীদের পাচার করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার প্ররোচনার দায়ে’ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে৷
মূলত, এই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন পাচারকারীকে গ্রেপ্তারে সক্ষম হয় ইতালির পুলিশ৷
পুলিশ বলছে, এই ব্যক্তি ইতোপূর্বে ২০১১ সালে একজন মানবপাচারকারী হিসেবে সিসিলির আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন৷
প্রচণ্ড ঠান্ডা, প্রতিকূল আবহাওয়াসহ নানা ধরনের ঝুঁকি সত্ত্বেও ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা বাড়ছেই৷
জানা গেছে, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ১০,৫৭০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী সমুদ্রপথে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন৷ ঝুঁকিপূর্ণ এ যাত্রায় কমপক্ষে ২২৯ জন মারা গেছেন৷