logo
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৩:১৯
৫০ বছরেও ব্রিজ হয়নি, ভরসা বাঁশের সাঁকো
নজরুল ইসলাম রাজু, রংপুর ব্যুরো

৫০ বছরেও ব্রিজ হয়নি, ভরসা বাঁশের সাঁকো

ব্রিজ না থাকায় শিশুরা ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হচ্ছে। ছবি: নজরুল ইসলাম রাজু/ ভোরের আকাশ

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের প্রতিপাল গ্রাম। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বুড়াইল নদী। স্বাধীনতার পর থেকে ওই এলাকায় একটি সেতু নির্মাণ নিয়ে বারবার প্রতিশ্রুতি মিললেও ৫০ বছরেও এর বাস্তবায়ন আলোর মুখ দেখেনি। ফলে বাধ্য হয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হচ্ছেন ১০ গ্রামের মানুষ। এতে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, তাম্বুলপুর ইউনিয়নের প্রতিপাল গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বুড়াইল নদী। নদী পারাপারের জন্য চাঁদা তুলে বাঁশের সাঁকো করেছে স্থানীয়রা। সেখানে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে পশ্চিমদেবু, শালমারা, পরান, ব্রাহ্মণীকুণ্ডা, আদম, পাওটানা, কামারপাড়াসহ ১০ গ্রামের মানুষদের। সাঁকো দিয়ে ঝুঁকিতে পার হচ্ছে স্কুলগামী শিক্ষার্থী এবং বৃদ্ধরা। এ ছাড়াও উৎপাদিত ফসল পরিবহণে ভোগান্তিতে পড়তে হয় কৃষকদের।

স্থানীয় চাষি নুর আলম মিয়া জানান, দীর্ঘদিন অনেক কষ্টে জমির ফসল নিয়ে পার হতে হচ্ছে। বন্যার সময় দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। সরকার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বরাবর ব্রিজের জন্য অনেক আবেদন করেও কাজ হচ্ছে না। এই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ দূর করতে একটি ব্রিজের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।

স্থানীয় রফিকুল ইসলাম জানান, স্বাধীনতার পর থেকে এখানে কোনো সেতু নির্মাণ করা হয়নি। প্রায় ৫০ বছর ধরে দুর্ভোগে এ অঞ্চলের মানুষ। বাঁশের সাঁকো দিয়ে কোনোমতে চলাচল করছেন তারা।

রুহুল আমিন বলেন, এই সাঁকো দিয়ে বয়স্ক মানুষ ও বাচ্চারা পার হতে পারে না। অনেক কষ্টে পারাপার হতে হচ্ছে। ২০১৮ সালে প্রতিপাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী সাঁকো পার হওয়ার সময় পা ফসকে পানিতে পড়ে ডুবে মারা যায়। তারপরও কেউ সাঁকো নির্মাণ কাজে এগিয়ে আসেনি।

তাম্বুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বজলুর রশিদ মুকুল বলেন, ‘এ বিষয়ে এলজিইডির সঙ্গে কয়েক দফায় কথা হয়েছে। চেষ্টা করা হবে ব্রিজ নির্মাণের। আগামী মিটিংয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।’

রংপুরের পীরগাছা উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্রিজ নিয়ে দীর্ঘদিনের দাবি এলাকাবাসীর। আমরাও কথা বলছি দপ্তরে। সেতু নির্মাণের বিষয়ে কাগজপত্র অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হয়ে এলে কাজ শুরু হবে।’

রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, ‘পীরগাছার বুড়াইল নদীর ওপর ব্রিজের ব্যাপারে স্থানীয় নির্বাহী ও এলজিইডি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। ব্রিজের বিষয় ও স্থানটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে অনুমোদন দিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।’