logo
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১০:২৪
পুতিনের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বিশ্ববাসী

পুতিনের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বিশ্ববাসী

সোমবার ডনবাসে রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের পরবর্তী পদেক্ষপ কী হতে পারে তার জন্য আবারো অপেক্ষায় রয়েছে বিশ্ববাসী। কারণ, এর আগে ২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলের সময়ও মানুষ এমন পরিস্থিতিতে পড়েছিল। তবে লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে, আসছে দিনগুলো সংকটময় হবে। টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত ভাষণে ইউক্রেন এবং পশ্চিমা বিশ্বের বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতি নিয়ে অভিযোগের পাহাড় তুলেছেন পুতিন।

স্থানীয় সময় গত সোমবার ডনবাসে রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন পুতিন। এটা ইউক্রেন নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে উত্তেজনা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়িয়েছে। কলমের আঁচড়ের মধ্য দিয়ে পুতিন ইউক্রেনকে আরো টুকরো টুকরো করে দিয়েছেন।

এর আগে ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ার ক্ষেত্রেও তিনি একই কাজ করেছিলেন। স্বীকৃতি দেওয়া রাষ্ট্রগুলোতে শান্তিরক্ষী পাঠাবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে মস্কো।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, এই বাহিনী অগ্রগামী হয়ে সেখানে পুরোদস্তুর আক্রমণ শুরুর মতো ভয়ংকর ঘটনাও ঘটাতে পারে। অস্ত্রধারীরা যদি শেষ পর্যন্ত ভূ-রাজনীতির খেলায় মেতে ওঠে তাহলে সামনের দিনগুলো হবে খুবই ভয়াবহ এবং এটাই ভবিষ্যৎ বিশ্বের গতিপথ নির্ধারণ করবে। এটা কারো জন্যই সুখকর হবে না।

পুতিন যদি শান্তিরক্ষী পাঠানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেন তাহলে ইউক্রেন উত্তেজনা নিরসন করা সম্ভব। এমনও হতে পারে যে ইউক্রেনের পশ্চিমের দিকে ঝোঁকার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও নতুন নতুন অঞ্চলগুলো নিজ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর রাশিয়াকে পুরো দেশ আক্রমণ করা থেকে বিরত করতে আলোচনার পথে যেতে পশ্চিমা বিশ্বকে একটি সুযোগ দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন পুতিন।

একধাপ পিছিয়ে পুতিন যদি পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে মতভেদ তৈরি অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে (যেসব দেশ যুদ্ধের পথে যেতে চায় না) আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে আগ্রহী হন, তাহলে বিশ্ব একটা বড় সংকট এড়াতে পারবে। এমনটা হলে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ নতুন করে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতি থেকে রক্ষা পাবে। এটা মধ্যবর্তী নির্বাচন এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সহায়ক হবে।

পুতিনের সোমবারের ভাষণ এবং সীমান্তে এক লাখ ৯০ হাজারেরও বেশি সেনার উপস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নেতা ও গোয়েন্দাদের অভিমত, সেখানে সীমিত পর্যায়ে হলেও সংঘাত হবে।

ক্রেমলিনের মতে, ইউক্রেনকে রাশিয়া থেকে আলাদা করা যায় না। ইউক্রেনকে তারা বিচ্ছিন্ন কোনো রাষ্ট্র মনে করে না- এই বিষয়টি পুতিন তার বক্তব্যে স্পষ্ট করে দিয়েছেন।

দীর্ঘ ভাষণে পুতিন বলেন, ইউক্রেন আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও আত্মার অবিচ্ছেদ্য অংশ। এখানকার যোদ্ধা বা সাধারণ জনগণের শরীরে আমাদের রক্ত বইছে। রাশিয়াই আজকের এই আধুনিক ইউক্রেন সৃষ্টি করেছে।

যদিও গত সোমবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ আয়োজিত জরুরি বৈঠকে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি লিন্ডা থমাস বলেন, পূর্ব ইউক্রেনে শান্তিরক্ষার জন্য রুশ সেনা পাঠানোর ঘটনাটি ফালতু কথা ছাড়া আর কিছু নয়। কারণ এই সৈন্যরাই ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর অজুহাত সৃষ্টি করতে পারে।

সিএনএন অবলম্বনে