logo
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১১:৫৬
‘স্কাউটিং ফর বয়েস’ শিশুদের গড়ে তুলবে
ইফফাত শরীফ

‘স্কাউটিং ফর বয়েস’ শিশুদের গড়ে তুলবে

আগের দিনের মতো মঙ্গলবারও বইমেলায় ছিল ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড়। ছবিটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে তোলা। ছবি ভোরের আকাশ

‘স্কাউটিং হলো একটি আন্দোলন, যার কাজ হচ্ছে আনন্দের মধ্য দিয়ে শিক্ষা দান। স্কাউটিংয়ের মূল লক্ষ্য হচ্ছে শিশু, কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক, মানসিক, নৈতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক এবং সামাজিক গুণাবলি উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের পরিবার, সমাজ দেশ তথা বিশ্বের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। স্কাউট কার্যক্রমে কতগুলো বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে হাতে-কলমে কাজ শেখা, ছোট-দল পদ্ধতিতে কাজ করা, ব্যাজ পদ্ধতির মাধ্যমে কাজের স্বীকৃতি প্রদান ইত্যাদি।

এর মাধ্যমে একজন ছেলে বা মেয়ে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে। স্কাউটিংয়ের মধ্যে লুকিয়ে থাকে অপার আনন্দ। যার স্বাদ নিতে হলে যোগ দিতে হবে এই আন্দোলনে। যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন ১৯০৭ সালে লর্ড ব্যাটেন পাওয়েল অফ গিলওয়েল’।

এই আন্দোলন সম্পর্কে ধারণা সবার কাছে তুলে ধরতে ‘স্কাউটিং ফর বয়েস’ নামে নতুন এই বইটি এসেছে এবারের বাংলা একাডেমির বইমেলায়। বইটি আকাশ প্রকাশনীর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। লন্ডনের হোরেস কক্স থেকে ১৯০৮ সালে পাক্ষিক আকারে প্রকাশিত বইটির ই-বাংলা অনুবাদ করেছেন শামীম হাসান।

জানতে চাইলে বইটির অনুবাদক শামীম হাসান বলেন, ‘খেলাধুলার ওপর আমি বেশ কয়েকটি বই অনুবাদ করেছি। তবে বাংলাদেশে স্কাউটিংয়ের ওপর তেমন কোনো বই ছিল না। আকাশ প্রকাশনীর কর্ণধার আলমগীর সিকদার লোটনের অনুরোধে বইটি আমি অনুবাদ করি। আর স্কাউট সম্পর্কে আমার নিজেরও অনেক আগ্রহ ছিল। বইটি পড়েও আমার অনেক ভালো লেগেছিল। স্কাউটের ইতিহাস-অতীত সম্পর্কে আমরা অনেকেই তেমন জানি না। একটা ছেলে যদি এই বইটি পড়ে, তাহলে সে তার জীবন সম্পর্কে অনেক কিছু জানবে। নিজেকে গড়ে তোলার জন্য এই বইটি অনেক সাহায্য করবে।

আকাশ প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি মো. মাঈনউদ্দিন ভোরের আকাশকে বলেছেন, ‘স্কাউটিংয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা যা কিছু শিখতে চাই তার সামগ্রিক বিষয়গুলো এই বইটিতে উল্লেখ আছে। এই বইটি আমাদের স্টলে অনেক বেশি বিক্রি হচ্ছে। মূলত স্কাউটিংয়ে আগ্রহী যারা তারা এই বইটি বেশি কিনছে।’ সারা বছরই মানুষ কমবেশি বই কেনে। তবে মেলা থেকে বই কেনার মধ্যে ভিন্ন একটা মজা আছে। বইমেলায় যারা বই কিনছেন, তাদের অধিকাংশকে পুরোনো বই অথবা পুরোনো বয়ের নতুন কোনো সিরিজ বেশি কিনতে দেখা গেছে।

গতকাল মঙ্গলবার বইমেলার অষ্টম দিনে সরেজমিনে এমন চিত্রই দেখা গেছে। স্টল ঘুরে ঘুরে বই কিনছিলেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্স বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র মো. রাকিবুল হাসান শুভ। তার পছন্দের বইগুলো সংগ্রহ করছিলেন বিভিন্ন স্টল থেকে। বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি থাকার কারণে নিজ বাড়ি রাজশাহী থেকে বন্ধুদের সাথে বই কিনতেই তিনি মেলায় এসেছেন। তার হাতে থাকা থলিতে ৬টি বই ছিল। এর মধ্যে চারটিই পুরোন বই। দুটি নতুন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে লেখক আরিফ আজাদের বই ‘এবার ভিন্ন কিছু হোক’, সমকালীন প্রকাশনীর ‘প্রবর্তনা’ ইত্যাদি বই।

কোন ধরনের বই পড়তে পছন্দ করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ধর্মীয় এবং গবেষণাভিত্তিক বইগুলো বেশি পছন্দ। ধর্মীয় বই পড়া থেকেই বইয়ের প্রতি আগ্রহটা জন্মায়। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা বই না পড়ার কারণে ধর্মের এবং ইতিহাসের ব্যাপারে ঠিকমতো কিছু জানতে পারছে না। তারা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বেশি প্রভাবিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রভাবিত হওয়াটা যে কোনো ভালো বিষয় নয়, তা প্রতিনিয়ত আমাদের সমাজের চিত্র দেখলেই বোঝা যায়।

ফয়েজ আহমেদ নামের একজন চাকরিজীবী তার দুই সন্তানকে নিয়ে মেলায় এসেছেন। তিনি ভোরের আকাশকে বলেন, ‘মেলা অনেক সুন্দর চলছে। যেই বইটা আমি নীলক্ষেত থেকে একশত বিশ টাকায় কিনতে পারছি সেই বইটা আমি মেলা থেকে একশত পঞ্চাশ টাকায় কিনতে হচ্ছে।’