logo
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১১:২৮
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ জনসম্পৃক্ত ইস্যুতে মাঠে থাকবে বিএনপি
এম সাইফুল ইসলাম

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ জনসম্পৃক্ত
ইস্যুতে মাঠে থাকবে বিএনপি

* আজ নয়াপল্টনে সমাবেশ * কর্মসূচিতে সাধারণের অংশগ্রহণে গুরুত্বারোপ

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদসহ জনসম্পৃক্ত সব ইস্যুতে এখন থেকে মাঠে থাকবে বিএনপি। দাবি আদায়ে জনরায় নিজেদের পক্ষে রাখতে দলটি আবারো সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে আজ শনিবার

নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের মাধ্যমে মাঠে নামছে বিএনপি। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সারা দেশে দলটির বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলটির নেতারা বলছেন,

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস ওঠা জনসাধারণের পক্ষে তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে, ওমিক্রনসহ দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে ১১টি নির্দেশনা দিয়ে বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। ওই বিধিনিষেধে রাজনৈতিক সভা সমাবেশেও নিষেধাজ্ঞা ছিল।

এরপর থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বেশ স্থমিত হয়ে পড়ে। বিধিনিষেধের কারণে বিএনপির পূর্ব ঘোষিত কয়েকটি জেলা সমাবেশও স্থগিত করা হয়। নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ সরকার ও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে

পাঠিয়ে সুচিকিৎসার দাবিতে গত বছরের শেষদিকে সোচ্চার হয় বিএনপি। ঢাকাসহ সব বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে পালিত হয় বিভিন্ন কর্মসূচি। বছরের শেষভাগের কর্মসূচিতে ব্যাপক জনসমাগম বিএনপিকে বেশ চাঙ্গাও করে তোলে।

এদিকে দলটি বর্তমানে আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন মেরুকরণেও কাজ শুরু করে দিয়েছে। নিজেদের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখার পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, ২০ দলীয় জোটের পাশাপাশি কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দল

ও বাম দলগুলোকে কাজে লাগাতে তৎপর বিএনপি। বিশেষ করে চাল, ডাল, তেল, গ্যাস, ডিজেলসহ প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিকে ঢাল হিসেবে কাজে লাগাতে চায় তারা। এ মুহূর্তে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামের ইস্যু

মাথায় নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি। চলমান এ ইস্যুতে মাঠে নামলে জনরায়ও বিএনপির পক্ষে আসবে বলে মনে করছেন দলটির নেতারা।

এছাড়া বিএনপি জোটে থাকা দলের নেতারাও চায় জনসম্পৃক্ত ইস্যুতে কর্মসূচি। ইতঃপূর্বে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার সুচিকিৎসার দাবি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং দলীয় নানা ইস্যুতে কর্মসূচি পালন করলেও

জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আন্দোলন না করার অভিযোগ রয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে। একদিকে এ ধরনের অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি; অন্যদিকে আগামী দিনের আন্দোলন বা বিএনপির দাবি আদায়ে জনরায় পক্ষে নিতে এসব

কর্মসূচিতে মাঠে নামছে দলটি।

এরই মধ্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সারা দেশে দুই সপ্তাহের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসঙ্গে নিত্যপণ্যের দাম কমানো ও উপজেলা পর্যায়ে টিসিবির পণ্য

পৌঁছানোর দাবি বিএনপির। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ শনিবার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের যৌথ উদ্যোগে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার প্রস্তুতিও নিয়েছে বিএনপি। দলটির চেয়ারপারসনের

মিডিয়া উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার আজকের সমাবেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এরই অংশ হিসেবে বিএনপি ২৮ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় পর্যায়ে, ২ মার্চ জেলায়, ৫ মার্চ উপজেলায় সমাবেশ এবং ৬ মার্চ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। একইসঙ্গে ৮ মার্চ জাতীয়তাবাদী যুবদল, ৯ মার্চ

জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল, ১০ মার্চ জাতীয়তাবাদী কৃষক দল এবং ১৫ মার্চ জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল একই দাবিতে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। এছাড়া ১২ মার্চ সারা দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে গ্রাম, ওয়ার্ড ও হাটবাজারে

‘হাট সমাবেশ’ করবে বিএনপি। এ সময় জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধিতে লিফলেট বিতরণ করা হবে। নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে দলীয় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের ব্যাপারে পজিটিভলি কাজ করতে দলের নেতাকর্মীদের

নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু। তিনি বলেন, লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধিতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। বিএনপি

জনগণের দল। এ অবস্থায় দল ঘরে বসে থাকতে পারে না। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা জেলা, উপজেলায়; এমনকি বিভিন্ন হাটবাজারেও সমাবেশ করব। এসব সমাবেশে সাধারণ মানুষ যেন যোগ দেন, সে ব্যাপারেও কাজ চলছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ সব ইস্যুতে বিএনপি আগেও মাঠে ছিল। তবে এখন গতি আরো বাড়ানো হবে। গতি বাড়ানোর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, লাগাতার নিত্যপণ্যের দাম

বৃদ্ধিতে দেয়ালে পিঠ ঠেকেছে মানুষের। মানুষকে বাঁচাতে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরতে তারা কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন।