logo
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১২:০৯
গ্রন্থমেলা প্রতিদিন
শেখ রাসেলকে নিয়ে বই শিশুদের পছন্দের শীর্ষে
ইফ্ফাত শরীফ

শেখ রাসেলকে নিয়ে বই শিশুদের পছন্দের শীর্ষে

বইমেলায় রঙবেরঙের মলাট করা বইগুলো শিশুদের বেশি পছন্দ। ছবি- ভোরের আকাশ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালোরাতে ১০ বছরের অবুঝ ও নিষ্পাপ শিশুটিও ঘাতকদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। রাসেল ছিল দুরন্ত শিশু। তাকে নিয়ে মানুষের ভালোবাসা ও কৌতূহলের অন্ত নেই। শিশু-কিশোর তথা সব বয়সি মানুষেরই রয়েছে রাসেলের প্রতি অফুরন্ত আবেগ, স্নেহ, মমতা আর আগ্রহ। বঙ্গবন্ধু ও শেখ রাসেলকে নিয়ে সংকলিত বইগুলোর ওপর রয়েছে পাঠকদের ব্যাপক আগ্রহ। বিশেষ করে শিশুদের পছন্দের তালিকায় তালিকার শীর্ষে রয়েছে এই বইগুলো।

গতকাল শনিবার ছিল বই মেলার বারতম দিন। এ দিনও বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ছিল শিশু প্রহর। ছুটির দিন এবং একই সঙ্গে শিশুপ্রহর হওয়াতে বই মেলায় প্রচুর ভিড় লক্ষ করা যার।

তবে বইমেলায় শিশু চত্বরে বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারবর্গের ওপর লেখা বইগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে স্টলগুলো ঘেঁটে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বই হচ্ছে রফিকুজ্জামান হুমায়ুনের লেখা ‘ছোটদের শেখ রাসেল’, বদরুন নাহার খান সম্পাদিত ‘গল্পে গল্পে শেখ রাসেল’, ‘প্রিয় বন্ধু শেখ রাসেল’ বইগুলো। মূলত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে এ প্রজন্মকে জানাতেই সচেতন অভিভাবকরা এসব বইয়ের দিকে ঝুঁকছেন।

বঙ্গবন্ধু ও শেখ রাসেলকে নিয়ে সংকলিত বইগুলোর ওপর রয়েছে পাঠকদের ব্যাপক আগ্রহ। ছবি- ভোরের আকাশ

 

জনতা স্টলের বিক্রয় প্রতিনিধি তামান্নার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের ওপর লেখা বইগুলো দিনে প্রায় ১০০ থেকে ২০০ কপির বেশি বিক্রয় হয়। এর সঙ্গে তিনি আরো জানান, বিভিন্ন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকরা মেলায় এসে শেখ রাসেলের বইগুলো খোঁজ করেন। পাশাপাশি যারা এসব বই কিনছেন প্রায় ১০ বা ২০ সেট করে নিয়ে যাচ্ছেন।

এসব বই বেশি বিক্রি হওয়ার কারণ হিসেবে প্রাকাশকরা বলছেন বেশির ভাগ স্কুলগুলোতে এখন শেখ রাসেল কর্নার আছে। তাই সেখানে এসব বইয়ের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে বলে জানিয়েছেন প্রকাশকরা।

জনতা প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক সাদিকুল ইসলাম হৃদয় ভোরের আকাশকে বলেছেন, শেখ রাসেলের ওপর লেখা বইগুলো আমরা বেশি অর্ডার পাচ্ছি। এই বইগুলো বিশেষ করে স্কুল এবং সরকারি কিছু দপ্তর বেশি সংগ্রহ করছেন। অবশ্য এই বইগুলো যারা নেন তারা অনেক বেশি পরিমাণে নেন। আমাদের স্টলে যে অভিভাবকরা আসেন তারা বেশির ভাগই বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত বইগুলোর সেট কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। যাতে করে বাচ্চারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে।

বইমেলায় রঙবেরঙের মলাট করা বইগুলো শিশুদের বেশি পছন্দ। একেক শিশু এক এক ধরনের বই পছন্দ করছে। কারো ড্রইংয়ের বই পছন্দ কারো আবার মহাকাশ-বিজ্ঞানের বই পছন্দ।

‘চিরন্তন’ প্রকাশনীর প্রকাশক সামিউন বাসির ভোরের আকাশকে বলেন, কোভিডের পর এ বছর মেলা খুব ভালো হচ্ছে। ছোট বাচ্চারা রূপকথার গল্পের বইগুলো বেশি চাচ্ছে। তবে যাদের বয়স ১৪ বা ১৫ তারা আবার মহাকাশ বা বিজ্ঞান সংক্রান্ত বইগুলো বেশি নিচ্ছে। আমাদের সৌরজগতের ওপর একটা বই আছে সেটা বাচ্চারা বেশি নিচ্ছে।

বইমেলায় নালন্দ উচ্চবিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে তিন বন্ধু শরণ, বিভর এবং আরাধ্য একসঙ্গে বইমেলায় এসেছে তাদের মায়ের সঙ্গে। এর মধ্যে শরণের সঙ্গে কথা হলে সে জানায় তার পড়ার উপযোগী বইগুলো সে মেলায় খুঁজছে। এই তিন বন্ধু সবাই ভূতের গল্পের বই, জাফর ইকবালের ছোটদের জন্য লেখা বই এবং মহাকাশের, অ্যাডভেঞ্চার বইগুলো পছন্দ। এই তিন বন্ধু ভোরের আকাশকে জানায়, বই পড়ার অভ্যাস থেকেই বই কিনতে তাদের ভালো লাগে। মেলায় এসে এত বই দেখে তারা দিধায় পড়ে যাচ্ছে কোন বই রেখে কোন বই কিনবে।

তবে অভিভাবকরা বলছেন, শিশুদের যদি ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার অভ্যাস করানো যায় সেটা তাদের ভবিষ্যতের জন্যই ভালো। এই আশা থেকেই অনেক অভিভাবক তাদের ছোট সোনামণিদের নিয়ে বইমেলায় আসছেন।