ঢাকা আইনজীবী সমিতি (বার) নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান করেছে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেল। আজ রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভবনের ৪ তলায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে ফলাফল
প্রত্যাখানের কথা জানায় প্যানেলটি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম, সাধারণ সম্পাদক ওমর
ফারুক ফারুকী, নীল প্যানেলে সভাপতি প্রার্থী খোরশেদ মিয়া আলম, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার বলেন, ‘গত ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী কমিটির ২০২২-২০২৩ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সাদা প্যানেল ও নীল প্যানেল অংশগ্রহণ করেন।
নীল প্যানেলে সভাপতি পদে খোরশেদ মিয়া আলম ও সাধারণ সম্পাদক পদে সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রার্থী হন। নীল প্যানেল জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী আইনজীবীদের নিয়ে এবং সাদা প্যানেল আওয়ামী লীগ সমর্থিত
আইনজীবীদের নিয়ে গঠিত প্যানেল।
নির্বাচনে ঢাকা মহানগরের পিপি এবং আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আবুকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করা হয়। তার নিয়োগে সকল সাধারণ আইনজীবীর আপত্তি ছিল। তার নেতৃত্বে
গঠিত নির্বাচন কমিশন ঢাকা বারের ২০২১-২২ এর নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম এবং দুর্নীতির মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করার অভিযোগ ছিল আব্দুল্লাহ আবুর বিরুদ্ধে। তারপরও ২০২২-২৩ এর নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য
আব্দুল্লাহ আবুর নানারকম বিতর্কিত ভূমিকা প্রমাণিত হওয়ার পরও তাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করা হয়। তার নিয়োগের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী আইনজীবীরাসহ সাধারণ আইনজীবীরা ২০২১-২২ সালের
নির্বাচনে অনিয়মের প্রতিবাদ করেন। সভা-সমাবেশ করে তার পদত্যাগ দাবি করেন।’
মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম লিখিতভাবে আব্দুল্লাহ আবুর নিয়োগের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রদান করেন। নীল প্যানেলের সকল প্রার্থীরাও তার প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করেন। বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিট এবং সাধারণ আইনজীবীদের মনে সংশয় হয়, আব্দুল্লাহ আবু দলীয় প্রভাবের বাইরে গিয়ে কোনোভাবেই নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সক্ষম হবে না। বাস্তবেও
সকল আশঙ্কা সত্য হয়েছে। সকল অনিয়মের শঙ্কা এবং দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করে বিতর্কিত নির্বাচন অনুষ্ঠানের ধারণাকে সত্য প্রমাণ করে আব্দুল্লাহ আবু ২০২২-২৩ এর নির্বাচন অনুষ্ঠান করেছেন।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠানের দুইদিন নির্বাচন কমিশনের ব্যাচ পরে নির্বাচনী বুথের মধ্যে প্রবেশ করে সাদা প্যানেলের প্রার্থীর পক্ষে বলপূর্বক সকল ভোটারের ভোট কেটে দিয়েছে। ভোটাররা প্রতিবাদ করলে তাদেরও
নানাভাবে অপমান অপদস্ত করা হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি রহস্যজনক কারণে নিরব ভূমিকা পালন করেন। বহিরাগতরা ভোটার স্লিপ বলপূর্বক সংগ্রহ করেন এবং ব্যালট সংগ্রহ করে। ব্যালট
বই ছিনতাই করেন। তাতে সাদা প্যানেলের প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দেওয়া হয়। তাতে জাল ভোটের এক মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বারে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আব্দুল্লাহ আবু সম্পূর্ণ ব্যর্থ হওয়ায়
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা ইউনিট এবং নীল প্যানেলের পক্ষে ভোটে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা অনাস্থা প্রদর্শন করেছেন। ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখান করেছে এবং সংগত কারণে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী
ফোরাম ঢাকা বার ইউনিট ও সাধারণ আইনজীবীদের পক্ষে প্রহসনের এ নির্বাচন ও ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখান করা হলো।