logo
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৯:২৯
উদ্বোধনের আট মাসেই ‘মডেল মসজিদে’ ফাটল!
সোহেল রানা, ঠাকুরগাঁও

উদ্বোধনের আট মাসেই ‘মডেল মসজিদে’ ফাটল!

হরিপুর উপজেলা চত্বরে নবনির্মিত মডেল মসজিদ

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা চত্বরে নবনির্মিত মডেল মসজিদটি উদ্বোধনের আট মাসের মধ্যে ফাটল ধরেছে। স্থানীয়রা গত বুধবার মসজিদটি দেখতে গেলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার মোট ছয়টি দেয়ালে ফাটল দেখতে পায়। এতে আতঙ্কিত হয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান তারা।

গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সারাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৮ সালের শেষের দিকে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অধীনে এই মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। গত বছরের ২১ জুন এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে মসজিদটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রংপুরের মেসার্স খায়রুল কবির নামের এক ঠিকাদার পায় কাজটি।

মসজিদটির নির্মাণ কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। তবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কাছে হস্তান্তর না করায় মসজিদটি এখনো ব্যবহার শুরু হয়নি। কিন্তু এত টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত মডেল মসজিদটি উদ্বোধনের মাস কয়েক পর ফাটল কেন ধরেছে এই প্রশ্ন স্থানীয় মুসল্লি ও সচেতন মানুষদের।

স্থানীয় আনোয়ারুল হক জানান, হরিপুর একটি প্রত্যন্ত ও সীমান্তবর্তী অঞ্চল। আধুনিক এই মসজিদটি এখানকার উন্নয়নের শক্ত মেরুদণ্ড হবে এমন প্রত্যাশা করেছিলেন তিনি। এখানে নামাজ আদায় করতে অনেক মুসল্লি অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে। কিন্তু নামাজ এখনো আদায় শুরু হয়নি তার আগেই মসজিদে ফাটল ধরায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সুপরিকল্পনা মাফিক কাজ হয়নি বলে তিনি ধারণা করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, যে ঠিকাদার কাজটি পেয়েছিল তিনি কাজ করেননি। বুলু নামে একজন মানুষ কাজটি করেছেন। আমার কাছে কাজটা করার সময় ভালো মানের মনে হয়নি। আমি স্থানীয় অনেককে কাজটি নজরদারি করতে বলেছিলাম। কিন্তু কেউ কর্ণপাত করেননি।

মসজিদের নির্মাণ কাজ করা কথিত ঠিকাদার বুলুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রংপুরের খায়রুল কবীর নামের এক ঠিকাদার পায় নির্মাণ কাজ। আমরা কয়েকজন মিলে তার থেকে কাজটি নিয়ে করেছি। আমরা এখনো কাজ শেষ করিনি। ফাটলের বিষয়ে শুনেছি। আমরা সেটাকে সংস্কার করে দিব।

এ বিষয়ে জানতে খায়রুল কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউর হাসান মুকুল উদ্বোধনের কয়েক মাস পড়েই মসজিদের ফাটলের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং কেন এই ফাটল ধরল খতিয়ে দেখার দাবি জানান।

ঠাকুরগাঁও গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) এম কে এম নুরুল হাসান মসজিদটি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন বলে জানিয়েছেন। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে বলেন তিনি।

মসজিদ পরিদর্শন ও ফাটল ধরার কারণ জানতে জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মডেল মসজিদটির বিভিন্ন দেয়ালের ফাটলের সংবাদ আমি পেয়েছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেখানে পরিদর্শন করে আমাকে জানিয়েছেন। রবিবার ঢাকা থেকে গণপূর্ত বিভাগ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসবেন পরিদর্শনে।’