logo
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৯:৩৮
হাতির উপদ্রব থেকে বাঁচতে বরই চাষ
শাকিল মুরাদ, শেরপুর প্রতিনিধি

হাতির উপদ্রব থেকে বাঁচতে বরই চাষ

কৃষক শামীম মোল্লা

শেরপুর সীমান্তের পাহাড়ি এলাকায় বেশিরভাগ সময় হাতির বিচরণ থাকে। ফলে ধান বা অন্যান্য ফসলে হানা দেয় হাতির দল। কিন্তু হাতির উপদ্রব থেকে বাঁচতে কাঁটা জাতীয় ‘বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি আপেল কুল’ চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। ইতোমধ্যে এসব চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন সেখানকার কৃষকরা। আর এসব চাষ করতে পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি বিভাগ ও পরিবেশবাদীরা।

শ্রীবরদীর গারো পাহাড়ের কর্ণঝোড়া বাবলাকোনা গ্রামের কৃষক শামীম মোল্লা। পেশায় একজন সার বিক্রেতা। পাহাড়ি এলাকায় তার জমি আছে। সেই জমিতে ধান চাষাবাদ শুরু করেন তিনি। কিন্তু প্রতি বছর সেই ধান হাতির দল খেয়ে ও মাড়িয়ে নষ্ট করে। তাই তিনি ওই জমিতে জেলায় প্রথমবারের মতো বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি আপেল কুলের চাষ করেন।

শামীম মোল্লা বলেন, ‘গারো পাহাড়ে সব ধরনের ফসল নষ্ট করে বন্যহাতির দল। তবে কাঁটাযুক্ত হওয়ায় বরই গাছ দেখে ভয় পায় হাতি। তাই ১ একর ২৫ শতাংশ জমিতে বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি আপেল কুলের চাষ করি। বর্তমানে একেকটি গাছের উচ্চতা চার ফুট। গাছের ডালে থোকায় থোকায় বরই ঝুলছে। গাছের বড় বড় ডাল ঠিক রাখতে বাঁশের খুঁটি দেওয়া হয়েছে। নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে গাছে ফুল আসে। জানুয়ারি মাসের শেষদিক থেকে বরই পরিপক্ব হতে থাকে।’

কৃষক শামীম মোল্লা আরও বলেন, ‘এই বাগানে চার শতাধিক বরইয়ের চারা লাগিয়ে আমার দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে কুল বিক্রি শুরু করেছি। আমি আশা করছি কমপক্ষে সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকার কুল বিক্রি করতে পারব। বাগানে সবসময় তিন থেকে চারজন শ্রমিক কাজ করে। আমার বাগান দেখে এলাকার অন্য কৃষকরাও বরই চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে।’

প্রতিবেশী কৃষক মিখাইন বিশ্বাস বলেন, ‘শামীম ভাইয়ের বাগান দেখে খুব ভালো লাগছে। এই বাগানে হাতি আসে না, ফলও নষ্ট করে না। তাই আমি চিন্তা করেছি, আমার যতটুকু জমি আছে সবটুকুতে বরইয়ের বাগান করব। শামীম ভাইয়ের কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছি।’

শ্রীবরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়ুন দিলদার বলেন, ‘অন্য জাতের চেয়ে বল সুন্দরী ও কাশ্মীরি আপেল কুল চাষ করলে কৃষকরা বেশি লাভবান হবেন। আমরা সব সময় কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের নানাভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। নতুন জাতের এ কুল চাষ করলে গারো পাহাড়ের কৃষকদের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। আর হাতির আক্রমণে ফসল নষ্টের আশঙ্কাও থাকবে না।’