logo
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২০:২৭
ঢাবিতে হলে পাঁচ মাসে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার ১৮ শিক্ষার্থী
ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাবিতে হলে পাঁচ মাসে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার ১৮ শিক্ষার্থী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন হলে বিগত পাঁচ মাসে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৮ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে মাত্র তিনটি ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও এ সময়ে আরও তিনজন সাংবাদিক ও দুইজন ফটো সাংবাদিক ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সকল তথ্য জানায় মানবাধিকার বিষয়ক শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট টর্চার’ (স্যাট)।

সংগঠনটির দেয়া তথ্যানুযায়ী, ঢাবির মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ৩ জন, মাস্টারদা সূর্যসেন হলে ৩ জন, বিজয় একাত্তর হলে ৩ জন, স্যার এ এফ রহমান হলে ৭ জন, রোকেয়া হলে ১ জন এবং জগন্নাথ হলে ১ জন শিক্ষার্থী

গত পাঁচ মাসে শারীরিক ও মানসিকভাবে ছাত্রলীগে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে স্যাট-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সালেহ উদ্দিন সিফাত বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস খোলার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর আশ্বাস দিয়েছিলেন যে

কোনো ধরনের নির্যাতনের ঘটনা ঘটবে না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস খোলার পর নির্যাতন শুরু হয়। এসব নির্যাতনের মধ্যে মাত্র তিনটি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

কিন্তু সেগুলো নামমাত্র ব্যবস্থা। সত্তর শতাংশ ক্ষেত্রে প্রশাসন নির্বিকার।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা এবারের প্রতিবেদনে নির্যাতনকারীর নাম প্রকাশ করছি না। কিন্তু সামনের দিনগুলোতে আমরা নির্যাতনকারীর নাম, বিভাগ, হল এসব প্রকাশ করব। প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা

দেব। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আচার্য ও মহামান্য আদালতের দ্বারস্থ হবো এবং রিট পিটিশন দায়ের করা হবে।”

সিফাত আরো বলেন, “বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান নির্যাতন, নিপীড়ন ও সহিংসতা মানবাধিকারের লঙ্ঘন। নাগরিকরা কোনো নির্যাতন, নিষ্ঠুর ও অমানবিক দণ্ডের শিকার হবে না- এ প্রতিশ্রুতি দেওয়া যেমন

রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তেমনি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষেরও দায়িত্ব শিক্ষার্থীরা যে কোনো নির্যাতন, নিপীড়ন কিংবা সহিংসতার শিকার হবে না, তা নিশ্চিত করা

এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে।

আবাসিক হলগুলোর ‘গেস্টরুম’ সংস্কৃতির কারণে এই নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশ।”

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্যাতনের মতো অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনীয় অপরাধের ক্ষেত্রে ষাণ্মাসিক ও বাৎসরিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে জানিয়েছে সংগঠনটি। এই লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়

প্রশাসনকে গেস্টরুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে একটি প্রশাসনিক বিধি এবং আইন তৈরি করারও প্রস্তাব রাখছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্মৃতি আফরোজ সুমি, আহনাফ সায়েদ খান, আনাস বিন মনির, সাদ আরমান নাফিস প্রমুখ।