logo
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২১:১৯
১ মার্চ থেকে পার্বতীপুর যাবে না বুড়িমারী কমিউটার ট্রেন
সুজন মোহন্ত, কুড়িগ্রাম

১ মার্চ থেকে পার্বতীপুর যাবে না বুড়িমারী কমিউটার ট্রেন

করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবে বন্ধ হওয়ার প্রায় দুই বছর পর আবারো একটি ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলপথ কর্তৃপক্ষ। মূলত কুড়িগ্রাম-রমনা রেলপথে রমনা লোকাল ট্রেনটি বন্ধ করে চিলমারী কমিউটার নামে একটি ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আগামীকাল মঙ্গলবার (১মার্চ) থেকে এই রেলপথে ট্রেনটি চলাচল করবে। অন্যদিকে দিনাজপুরের পার্বতীপুরগামী বুড়িমারী কমিউটার ট্রেনটি রুট পরিবর্তন করে লালমনিরহাট হয়ে বুড়িমারী পর্যন্ত চলাচল করবে বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে, লালমনিরহাটের ডিভিশনাল ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট খালিদুন নেছা।

এর আগে করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে ২০২০ সালের মার্চ মাসে সারাদেশের ট্রেন চলাচল বন্ধের পাশাপাশি এই রেলপথে চলাচলকারী ট্রেন দুটি বন্ধ করা হয়। পরে দেশের সব রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলেও ইঞ্জিনস্বল্পতা এবং জনবল সংকটের অজুহাতে কুড়িগ্রাম রেলপথে দীর্ঘ দুই বছর ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। তবে এ পথে কমিউটার ট্রেন নামে রেল যোগাযোগ চালুর উদ্যোগ নিলেও রমনা লোকাল ট্রেনটি সহসাই চালু হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

আর পার্বতীপুর রুটে না গেলেও বুড়িমারী কমিউটার ট্রেনটি সকাল ৮টায় লালমনিরহাট স্টেশন থেকে ছেড়ে বুড়িমারী যাবে। সেখানে ২০ মিনিট বিরতি দিয়ে পুনরায় লালমনিরহাটে ফিরে যাত্রা সমাপ্ত করবে বুড়িমারী কমিউটার নামের ট্রেনটি। অন্যদিকে চিলমারী কমিউটার ট্রেনটি পূর্বের রংপুর এক্সপ্রেসের ঢাকাগামী যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া শাটল ট্রেনটি চিলমারীর রমনা থেকে সকালে ছেড়ে রংপুর পৌঁছাবে বেলা ১১টায়। সেখান থেকে লালমনিরহাট যাবে। পুনরায় লালমনিরহাট থেকে এ ট্রেনটি বিকেলে কাউনিয়ায় ঢাকার যাত্রীদের নিয়ে কুড়িগ্রামে আসবে। এরপর পুনরায় ঢাকার যাত্রীদের নিয়ে কাউনিয়ায় গিয়ে রংপুর এক্সপ্রেসে যাত্রীদের উঠিয়ে দিয়ে ট্রেনটি কাউনিয়া থেকে রমনা বাজার পৌঁছবে রাত ১১টায়।

কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে দুটি ট্রেন সময় পরিবর্তন করে পুনরায় চালু হলেও এতে অখুশি দুই জেলার অনেক যাত্রী। চিলমারী কমিউটার ও বুড়িমারী কমিউটার ট্রেন যাত্রীদের তেমন কাজে আসবে না বলে দাবি রেল যাত্রীদের। রেল বিভাগের এ সিদ্ধান্তের ফলে রংপুর বিভাগের যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ ও ট্রেন সংকটে পড়বে বলে দাবি করছেন সচেতন মহল।

রেল, নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির নির্বাহী পরিষদের সাবেক সভাপতি নাহিদ হাসান নলেজ বলেন, ‘লোকাল ট্রেনগুলো এই অঞ্চলের আন্ত:নগর ট্রেনের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই অঞ্চলের মানুষদের সুবিধার এই ট্রেনগুলোর চলাচলের পরিধি আস্তে আস্তে কমিয়ে আনা রাষ্ট্রের একটি বড় বৈষম্য।’

ট্রেন নিয়ে কাজ করা গণকমিটির সাবেক রেলপথ আন্দোলনের নেতা আবু ছোবাহান জুয়েল বলেন, ‘বুড়িমারী কমিউটার ট্রেনটি পার্বতীপুর হয়ে লালমনিরহাট থেকে বুড়িমারী যেত। এখন পার্বতীপুর ট্রেনটি যাবে না। আর সেখানে বিকল্প ট্রেন না থাকায় এ পথে চলাচলকারীদের বিকল্প পথে বাসে যাতায়াত করতে হবে। এতে শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবীরা বিপাকে পড়বে।’

রেলপথ আন্দোলনের আরেক নেতা আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমরা পার্বতীপুর বেজ ট্রেন চাই। বন্ধ হয়ে যাওয়া রমনা লোকালটি পুনরায় চালু করা হোক। বুড়িমারী ট্রেনটি আগের মতো রুটে চলাচলের দাবি করছি। আর কমিউটার নামের ট্রেনটি যে টাইম শিডিউল নিয়ে রমনায় চালু হতে যাচ্ছে তাতে যাত্রী সংকটের অজুহাতে কয়েকদিন পর আবারো এটি বন্ধ করার হীনউদ্দেশ্য রয়েছে বলে আমি মনে করি। কারণ সকালে যেসময় ট্রেনটি কুড়িগ্রাম ছেড়ে যাবে, তার কিছু সময় আগে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেন কুড়িগ্রাম থেকে ছেড়ে যায়। যাত্রীরা রংপুর পর্যন্ত কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনে যেতে পারবেন। তাহলে কমিউটারে চড়বেন কে? একই সঙ্গে স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে ট্রেনের যাত্রীবান্ধব সময়সূচি নির্ধারণের দাবি জানাই।’

লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় ম্যানেজার শাহ মোহাম্মদ সুফি নূর বলেন, ‘আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে আমরা রমনা রেলপথে কমিউটার ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এখনো শিডিউল চূড়ান্ত হয়নি। আর বুড়িমারী কমিউটার ট্রেনটি বন্ধ করা হচ্ছে না। যাত্রার পরিধি ছোট করে লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটে আপ ও ডাউন করবে।’