logo
আপডেট : ১ মার্চ, ২০২২ ১৬:৩৮
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে অনুমোদন
দাবি পূরণে উচ্ছ্বসিত ঠাকুরগাঁওবাসী
সোহেল রানা, ঠাকুরগাঁও

দাবি পূরণে উচ্ছ্বসিত ঠাকুরগাঁওবাসী

ঠাকুরগাঁওয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। এ খবর শোনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উচ্ছ্বাসে ভাসছে ঠাকুরগাঁওবাসী। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন অনেকে।

“জাগো বাহে কুনঠে সবাই, ঠাকুরগাঁওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চাই”, “ঠাকুরগাঁওয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চাই দিতে হবে”। ২০১৩ সালে এমন স্লোগানে নিজেদের দাবি জানিয়েছিলেন ঠাকুরগাঁওবাসী। দীর্ঘ আট বছর পর সেই দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে জেলাবাসীর।

জানা যায়, আট বছর আগে নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও নতুন প্রজন্মের মেধা ও মনন বিকাশের লক্ষ্য নিয়ে প্রথম দাবি তোলেন ব্যারিস্টার নূর সাদিক চৌধুরী। প্রধান সমন্বয়ক হয়ে গড়ে তোলেন ঠাকুরগাঁও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্য পরিষদ।

নিজের অনুভূতির কথা প্রকাশ করে ব্যারিস্টার নূর সাদিক চৌধুরী বলেন, ‘আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও নতুন প্রজন্মের মেধা ও মনন বিকাশে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে তিনটি কমিটি গড়ে তুলি। বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন কমিটি, বিশ্ববিদ্যালয় পরিকল্পনা কমিটি ও সমন্বয় কমিটি। সে সময় তিন কমিটিতে আহ্বায়ক ছিলেন সাংবাদিক সৈয়দ মেরাজুল হোসেন, অ্যাড. নূরুল হাবিব ও আতাউর রহমান।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সে সময় প্রথমে প্রত্যেকটি উপজেলায় গণসংযোগ করি। তারপর কয়েকজন করে গ্রুপ করে দেই। এভাবে আমরা প্রথমে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করি এক বছর। সে সময় আমরা সাড়ে তিন লাখ গণস্বাক্ষর নেই। এছাড়াও অনেক মানববন্ধন করেছি।’

‘আমাদের সঙ্গে জেলার সব শ্রেণিপেশার মানুষও রাস্তায় নেমেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে। অবশেষে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছি। এ অনন্দ ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের কার্যক্রম দ্রুত শুরু হবে এই প্রত্যাশা করি।’

শিক্ষাবিদ মনতোষ কুমার দে বলেন, ‘ঠাকুরগাঁওয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হতে যাচ্ছে। এটি অত্যন্ত সুখবর। শুনে খুব ভালো লেগেছে। বিশ্ববিদ্যালয় হলে এখানে উচ্চ শিক্ষিতের হার বাড়বে। সেই সঙ্গে এখানে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে। পাশাপাশি যে এলাকাজুড়ে প্রতিষ্ঠানটি হবে সে এলাকার মানুষগুলোর জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন হবে। মানুষ সচেতন হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়টি হলে যাতায়াত ব্যবস্থা বাড়বে পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে এ জেলা সমৃদ্ধ হবে৷ যত দ্রুত সম্ভব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টির কাজ শুরু হওয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আশা করছি জেলায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টি হলে বিভিন্ন পাশ দিয়ে জেলার জীবনযাত্রার মান বাড়বে।’

ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাংসদ ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের নেত্রী। তিনি জনগণের জন্য কাজ করে থাকেন৷ সেই প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ তিনি ঠাকুরগাঁওয়ে এসে অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দেন। তার মধ্যে তিনি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দেন। আজকে তা মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। আমরা ঠাকুরগাঁওবাসী অত্যন্ত আনন্দিত।’


‘ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০২২’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদনে ৫৬টি ধারা হয়েছে। এখানে রাষ্ট্রপতি আচার্য হবেন। তিনি একজন শিক্ষাবিদকে চার বছরের মেয়াদে ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেবেন। দুই জন থাকবেন উপ-উপাচার্য, একজন থাকবেন ট্রেজারার। এখানে একটি তহবিল ও রেজিস্ট্রার অফিস থাকবে।

খসড়া আইনে আরো বলা হয়েছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ও শিক্ষাক্রম পরিচালনার জন্য বিধি-প্রবিধি করে নিতে পারবেন। বিধি ও প্রবিধিতে সবকিছু ডিফাইন করা হবে।