logo
আপডেট : ১ মার্চ, ২০২২ ১৯:২৯
করোনা মোকাবিলায় আরো একটি সফলতা
টিকা প্রদানে বাংলাদেশের বিশ্বরেকর্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক

টিকা প্রদানে বাংলাদেশের বিশ্বরেকর্ড

এক দিনে এক কোটি বিশ লাখ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশের জনগণ। গণটিকার এ বিশাল আয়োজন করে বিশ্বরেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। একটি দেশের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনতে নির্দেশনা ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭৩ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকা প্রদান করেছে বাংলাদেশ। ফলে মোট জনসংখ্যার আলোকে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশিসংখ্যক জনগোষ্ঠী টিকার আওতায় এলো।

বাংলাদেশ টিকাবান্ধব দেশ। টিকাদানে বিশ্বে এখন বাংলাদেশের অবস্থান দশম। করোনা টিকা প্রদান কর্মসূচির সফলতায় বিশ্বের অনেক উন্নত দেশকেও পেছনে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ। রাশিয়া, জার্মানি, ফ্রান্সের মতো দেশও বাংলাদেশের থেকে টিকা প্রদানে পিছিয়ে রয়েছে। তাছাড়া, করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামাল দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর সূচকেও বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ বাংলাদেশের পেছনে পড়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা, টিকাদান কর্মসূচি এবং সামাজিক সচেতনতামূলক কার্যক্রমে সরকারের দক্ষ নেতৃত্ব এবং দেশের মানুষের জোরালো অংশগ্রহণ এ সফলতার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সীমিত সম্পদ ও আয়তনের বিপরীতে বিপুল জনসংখ্যা নিয়ে বাংলাদেশের এই সাফল্যে ইতোমধ্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছে বিশ্ববাসী। করোনায় মৃত্যুর সংখ্যার বিবেচনায় বাংলাদেশের সামনে রয়েছে অনেক উন্নত দেশ। কিন্তু, করোনা মহামারির মধ্যেও জীবন ও জীবিকা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। ফোর্বস ম্যাগাজিনসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে সরকারের সফল নেতৃত্বের প্রশংসা করা হচ্ছে।

জানুয়ারি মাসজুড়ে অবনতি হওয়া দেশের করোনা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত রয়েছে। করোনায় দৈনিক নতুন রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার এবং মৃতের সংখ্যা অনেকটা সহনীয় পর্যায়ে চলে এসেছে। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে দেশের সফল করোনা টিকা কর্মসূচি। তবে, এ টিকা সংগ্রহে নানা জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। কিন্তু, টিকা সংগ্রহে থেমে থাকেনি সরকারের প্রচেষ্টা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও দেশের সঙ্গে জোরালো যোগাযোগ তৈরি করে বাংলাদেশ। একের পর এক টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে দেশে টিকা আমদানির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়, যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। অর্থাৎ নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি ডিঙিয়ে দেশের মানুষের করোনা টিকা প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের খবর জানায় দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ। দেশে প্রথম টিকা প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয় ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি। সারাদেশে এই কার্যক্রম শুরু হয় ৮ ফেব্রুয়ারি। এরই ধারাবাহিকতায়, এক দিনে এত বিপুলসংখ্যক মানুষকে টিকা প্রদান করা হলো।

শুরু থেকেই বাংলাদেশ সরকার ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম পরিচালনায় অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে। উন্নত রাষ্ট্র না হয়েও বিশ্বের উন্নত প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সমানতালে প্রতিযোগিতা করে ‘ভ্যাকসিন কূটনীতি’তে জয়ী হয় বাংলাদেশ। করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সফলভাবে ভূমিকা রাখছে। চমৎকারভাবে টিকা ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে আমরা টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছি।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশে টিকার কোনো সংকট নেই এবং হবেও না। পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে এবং প্রচুর টিকা পাইপলাইনে রয়েছে। সরকার যেভাবে সুন্দর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীবাহিনীর মাধ্যমে গণটিকা কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন তাতে শেখ হাসিনার সরকার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হচ্ছে। গণটিকা প্রদানের এ সাহসী ও মহতী উদ্যোগ করোনা মোকাবিলায় সরকারের আরো একটি সফলতা।

“সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা, টিকাদান কর্মসূচি এবং সামাজিক সচেতনতামূলক কার্যক্রমে সরকারের দক্ষ নেতৃত্ব এবং দেশের মানুষের জোরালো অংশগ্রহণ এ সফলতার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে”