বাংলা ভাষায় মরমী সাহিত্যের অবদান অপরিসীম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী এ মন্তব্য করেছেন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) উদ্যোগে সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদ ও নাগরিক সমাজের সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত অমর একুশে বইমেলার আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেছেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মরমীবাদ এর ইতিহাস বিশাল। এর মূলতত্ত্ব হচ্ছে স্রষ্টা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান।
তিনি বলেন, বিশ্বের প্রত্যেকটি ধর্মে মরমীবাদের চর্চা চলছে। এর প্রভাব বিশ্বের সব ভাষার সাহিত্য বিশেষ করে গান ও কবিতায় সুস্পষ্টভাবে বিদ্যমান।
ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আধ্যাত্ম বিজ্ঞানের চরম কথা-আমি কে? আমি কেন? বিশ্বের সব ধর্মের সাধকেরা আমি কে?-এ প্রশ্ন করে মূলে পৌঁছে দেখেছেন। স্রষ্টাই সব, আমি তাঁরই আনন্দময় সুন্দর একটি প্রকাশ মাত্র।
তিনি বলেন, আমি চেতনা বা আমি চিন্তা থেকে মুক্তি লাভের চেষ্টাই হলো মরমীবাদের মূল উদ্দেশ্য। এজন্য পবিত্র কোরানে বলা হয়েছে-মান আরাফ নাফসালু, ফাকাদ আরা আরাফা রাব্বাহু-অর্থাৎ যে নিজেকে জানতে পারে সে তার প্রভুকে চিনতে পারে।
তিনি বলেন, রবীন্দ্র-নজরুলের বিভিন্ন কবিতায় মরমীদের প্রভাব দেখা যায়। বাংলা ভাষায় মরমী সাহিত্যের উপাদান খুঁজতে হলে দৃষ্টি দিতে হবে বাঙালির লোকগাঁথা, বাউল, কীর্তন, জারি ও সারির দিকে। কেননা এগুলোর মধ্যে প্রোথিত থাকতে পারে আধ্যাত্মিক তত্ত্ব যা মরমীদের মূলকথা।
মহিউদ্দিন শাহ আলম নীপু’র সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অমর একুশে বইমেলার আহ্বায়ক ড.নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। প্রধান বক্তা ছিলেন ড. সেলিম জাহাঙ্গীর।
আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এড. আবু হানিফ, কাউন্সিলর আবুল হাসনাত বেলাল, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী ও ড. মাসুম চৌধুরী।
ড. সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, বাংলা সাহিত্যের আদিপর্ব অর্থাৎ চর্যাপদ থেকে আধুনিক কাব্য ও সঙ্গীত প্রবাহের চিন্তার স্পষ্টতায়, ভাষার স্বচ্ছতায়, প্রত্যয়ের দৃঢ়তায় মরমী চেতনা এক অসাধারণ ব্যতিক্রমী নমুনা। মরমী সাধকেরা চোখ বন্ধ করে অন্তর্দৃষ্টি ও গভীর চিন্তার দ্বারা সত্য ও সুন্দরকে উপলব্ধি করতে পারেন।
ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু বলেন, চট্টগ্রাম বার আউলিয়ার পূণ্যভূমি। সুফী সাধকেরা এখান থেকে ইসলাম এর প্রচার-প্রসার ঘটিয়েছেন।