মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বরুন্ডি এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে কালীগঙ্গা নদী। তবে বরুন্ডি এলাকায় কালীগঙ্গা পারাপারে নেই কোনো ব্রিজ। এ কারণে নদী পারাপারে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকাই স্থানীয়দের ভরসা।
মূলত এই খেয়াঘাট দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে মানিকগঞ্জ সদর, হরিরামপুর ও পার্শ্ববর্তী ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার ৩০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। তবে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা হওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না অনেকেই। জীবনের ঝুঁকি তো রয়েছেই।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুষ্ক মৌসুমে কালীগঙ্গা নদীর পানি কিছুটা কম থাকে। বর্ষায় পাড়ের দূরত্ব বেড়ে যায় কয়েকগুণ। তবে দুই মৌসুমেই চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে। কৃষিপণ্য ও ব্যবসায়িক মালামাল আনা-নেওয়ায় স্থানীয়দের গুনতে হয় অতিরিক্ত অর্থ। গর্ভবতী মা ও অসুস্থদের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিতেও ভোগান্তির শেষ নেই। নিত্যদিনের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে বরুন্ডি খেয়াঘাটে অবিলম্বে ব্রিজ নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।
বরুন্ডি খেয়াঘাট এলাকার রুবিয়া হক পড়াশোনা করেন মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে। কলেজ ও প্রাইভেট পড়ার কারণে সপ্তাহে চার থেকে পাঁচদিন মানিকগঞ্জ শহরে আসতে হয়। তিনি বলেন, ‘যেদিন আমাকে কলেজ বা প্রাইভেটে যেতে হয়, খেয়া ঘাটের জন্য সেদিন অন্তত ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বেশি সময় নষ্ট হয়। আসার সময়ও একই অবস্থা। এতে করে আমার মতো হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’
ব্যবসায়ী রমেন সাহা বলেন, ‘আমার জন্মের পর থেকেই ওই খেয়া দিয়ে নদী পার হচ্ছি। আমি কাপড়ের ব্যবসা করি। এই জায়গায় একটা ব্রিজ হলে আমার মতো অনেক ব্যবসায়ীর সুবিধা হবে।’
একই এলাকার কৃষক মতিন মোল্লা বলেন, ‘আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নেই। এমনিতেই এখন শাকসবজির দাম কম। তার উপর প্রতিটা পণ্য যখন এপার থেকে ওপারে নেওয়া হয়, তখন খরচ বেড়ে যায়। ফলে শাকসবজি বিক্রি করে তেমন লাভ হয় না।’
স্থানীয় সুধা রাজবংশী বলেন, ‘আমার স্বামী মাছের ব্যবসা করে। তিনি যখন এই মাছ নিয়ে বাজারে যান, তখন খেয়া পাড়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। অনেক সময় মাছ নষ্ট হয়ে যায়। এতে করে আমাদের অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়।’
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, জনগণের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে একটি ব্রিজ নির্মাণের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।