logo
আপডেট : ৪ মার্চ, ২০২২ ১৪:১৮
দৈনিক ভোরের আকাশে সংবাদ প্রকাশ
ঘর পাচ্ছেন সেই কমলা রানী
শাকিল মুরাদ, শেরপুর

ঘর পাচ্ছেন সেই কমলা রানী

বিধবা কমলা রানী কোচ

শেরপুরের ঝিনাইগাতী কাংশা ইউনিয়নের হালচাটি গ্রামের গৃহহীন অসহায় বিধবা কমলা রানী কোচ। দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রতিনিধিদের কাছে ঘুরেও সরকারি একটি ঘর পাননি ষাটোর্ধ্ব এই নারী। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয় দৈনিক ভোরের আকাশে। এরপরই বিষয়টি নজরে আসে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর উপহার মুজিববর্ষের ঘর পাচ্ছেন কমলা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ভোরের আকাশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আল মাসুদ। কমলা রানী উপজেলার হালচাটি গ্রামের মৃত চর্চারাম কোচের স্ত্রী।

ইউএনও ফারুক আল মাসুদ বলেন, ‘দৈনিক ভোরের আকাশের প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্টদের নজরে আশার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী কমলা রানী কোচকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার মুজিববর্ষের ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যেই সেই ঘর বাস্তবায়ন করা হবে।’

আরো পড়ুন: ‘এডা ঘর হলে মরার আগে শান্তিতে ঘুমাবার পাইতাম’

এদিকে ঘর পাওয়ার খবরে আনন্দে আত্মহারা কমলা রানী। তিনি বলেন, ‘মেলা (অনেক) ঘুরছি মানুষের অইনে (কাছে)। কেউ ঘর দেই নাই, সম্বাদিক (সাংবাদিক) আমারে পেপারে দিয়ে আমার ঘর দিতাছে, আমি খুব খুশি।’

স্থানীয় বাসিন্দা সাইজুরাম কোচ বলেন, ‘দৈনিক ভোরের আকাশকে ধন্যবাদ জানাই। সঠিক সময়ে সুন্দর একটি প্রতিবেদনের জন্য কমলা রানী ঘর পেতে যাচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি পত্রিকাটি অসহায় মানুষের পাশে থাকবে।’

প্রায় ২৫ বছর আগে কমলা রানীর দিনমজুর স্বামী চর্চারাম কোচের মৃত্যু হয়। স্বামী মারা যাওয়ার পর শুরু হয় কমলা রানী কোচের দুঃখ-দুর্দশার দিন। দুই শিশু ছেলেসহ তার জীবিকার তাগিদে বেছে নেন দিনমজুরির কাজ। স্বামীর ভিটেমাটি না থাকায় অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে দিনমজুরি করে তার দুই ছেলেকে লালন-পালন করে বড় করেছেন কমলা রানী। দুই ছেলে বিয়ে করে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে আলাদা থাকেন। তাদের সংসারের বোঝা বহন করতেই হিমশিম খেতে হয় তার।

এদিকে, বয়সের ভারে ন্যুইয়ে পড়েছেন কমলা রানী কোচ। হাঁটা-চলাও করতে পারেন না তিনি। ফলে অতিকষ্টে অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছেন। ছোট ছেলে মঙ্গল কোচ মাঝে-মধ্যে কিছু খাবার দেয়। তবে বেশিরভাগ সময় প্রতিবেশিরাই তাকে দেখেন বলে জানান স্থানীয়রা। থাকার বসতঘর না থাকায় গ্রামবাসীরা মিলে চার ফর্দ ঢেউটিন দিয়ে বনের জমিতে একটি চালা ঘর বেঁধে দেন তাকে।