রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন সতর্ক করে বলেছেন যে, যারা ইউক্রেনে রাশিয়ার কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করে দেশটির ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করছে তাতে ইউক্রেনের পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে।
সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে পুতিন এই আহ্বান জানান। এই বৈঠকটি রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত রচিয়া ২৪ নিউজ চ্যানেলে সম্প্রচার হয়।
ওই বৈঠকে দেওয়া বক্তৃতায় পুতিন দাবি করেন, ‘প্রতিবেশী নিয়ে আমাদের কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নেই’।
পুতিন বলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে প্রতিবেশীদের উচিত নয় আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া কারণ তাতে ‘প্রতিবেশীদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরো খারাপ করবে’।
অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রতি ইঙ্গিত করে পুতিন বলেন, ‘এমন কোনো পদক্ষেপের প্রয়োজন তিনি দেখছেন না’
‘আমি মনে করি যে কিভাবে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা যায়, সহযোগিতার সম্পর্ক বাড়ানো যায় এবং কিভাবে সম্পর্ক গড়ে তোলা যায় সে সম্পর্কে ভাবা’ বলেন পুতিন।
পুতিনের এই আহ্বান এমন সময়ে আসল যখন পশ্চিমা পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা রাশিয়ার ওপর কিভাবে আরো চাপ বাড়ানো যায় এই কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে ব্রাসেলসে জড়ো হচ্ছে।
পুতিন তার দাবি পুনরাবৃত্তি করে বলেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী এখন পর্যন্ত যত পদক্ষেপ নিয়েছে তা ‘একচেটিয়াভাবে রাশিয়ান ফেডারেশনের বিরুদ্ধে কিছু অবন্ধু সুলভ পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ার অংশ।’
ইউক্রেনের হামলার জেরে রাশিযার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে সব রকমের আর্থিক লেনদেন নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে জানিয়েছে, এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের জেরে মস্কোর প্রতি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মার্কিন প্রশাসন এই অভূতপূর্ব নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
এই পদক্ষেপটি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রে বা মার্কিন জনগণের মাধ্যমে রাশিয়ান ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে কোনো সম্পদ, যেখানেই থাকুক না কেন তা জব্দ করা হবে।’ ট্রেজারি ডিপার্টেমেন্ট পশ্চিমা মিত্রদের সাথে সমন্বয় করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ইউক্রেন আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় জেরে পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার মুদ্রার মান ডলারের বিপরীতে ৩০ শতাংশেরও বেশি মূল্য হারিয়েছে।
রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের মান অব্যাহত কমতে থাকার পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ান স্টক মার্কেটে লেনদেন শুরু হতে বিলম্ব হয়েছে। রুবলের পতনের মধ্যে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সোমবার সুদের হার ৯ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করছে।
আক্রমণ শুরুর কিছুক্ষণ পরেই যুক্তরাজ্য রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের পথ ধরে কানাডা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
বিবিসি, আল জাজিরা, সিএনএন