logo
আপডেট : ৫ মার্চ, ২০২২ ১১:২১
আবহাওয়া পরিবর্তনে বেড়েছে ডায়রিয়া রোগী
মোহাম্মদ বিল্লাল হোসাইন, নারায়ণগঞ্জ

আবহাওয়া পরিবর্তনে বেড়েছে ডায়রিয়া রোগী

নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতাল

নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেড়েছে। প্রতিদিন ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৯০ থেকে ১০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে নারী ও শিশুই বেশি। তবে রোগীর তুলনায় বেড কম হওয়াতে বিপাকে পড়েছে অনেকে। অপরদিকে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে হাজারের অধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। পুরো ফ্রেরুয়ারি মাসে রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৩১১ জন।

গতকাল শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের আইলপাড়া, হাজীগঞ্জ, ফতুল্লার তল্লাসহ নগরীর পাইকপাড়া, জল্লারপাড়, বাবুরাইল, নিতাইগঞ্জ, নয়াবাজার ও পাশের জেলা মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালে মাত্র ৯টি বেড রয়েছে। সেখানে বেড ও মেঝেতে গাদাগাদি করে রোগীদের জায়গা দেওয়া হচ্ছে। এসব রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা।

হাসপাতালে ভর্তি ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী সুলমান মিয়া বলেন, ‘গত বুধবার সন্ধ্যায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হই। এরপর সারারাত আর ঘুমাইতে পারিনি। পরে হাসপাতালে আইয়া ভর্তি হইলাম। আইসা দেখি হাসপাতালে রোগীতে ভর্তি। আমি আগের চেয়ে এখন একটু ভালো আছি।’

ছয় মাসের মেয়েকে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়েছেন মা শান্তা বেগম। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে মেয়ের কেন ডায়রিয়া হলো বুঝতে পারছি না। তাই হাসপাতালে ভর্তি করেছি।’

মুন্সীগঞ্জ থেকে এসে এক বছরের ছেলেকে নারায়ণগঞ্জের এই হাসপাতালে ভর্তি করেছেন সুমাইয়া আক্তার। তিনি বলেন, ‘শুক্রবার সকাল থেকে ছেলের বমি শুরু হয়। সঙ্গে ডায়রিয়াও ছিল। বাসায় খাবার স্যালাইন খাইয়েছি। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।’

ডায়রিয়া ওয়ার্ডের নার্স (ইনচার্জ) শিউলি আক্তার জানান, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে রোগীর চাপ অনেক বেশি। এ কারণে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। যখন এক সঙ্গে অনেক রোগী আসে, তখন বাধ্য হয়ে একই বিছানায় একাধিক রোগীকে দিতে হয়।

তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তাদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। কারণ ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মাত্র ৯টি বেড। আমরা তিন শিফটে ডিউটি করি। গত কিছুদিন ধরে রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। প্রতিদিন শতাধিক রোগী আসেন। যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দেড়গুণ।’

নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার গোলাম মোস্তফা ইমন জানান, হঠাৎ করে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া রোগীর প্রকোপ বেড়েছে। তাছাড়া বিশুদ্ধ পানি পান না করা ও ভেজাল খাবারও ডায়রিয়া আক্রান্তের কারণ। যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন, তাদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। যাদের অবস্থার অবনতি হচ্ছে, তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মশিউর রহমান ভোরের আকাশকে জানান, যারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন তাদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালটির চতুর্থতলার নির্মাণকাজ শেষে সেখানে ডায়রিয়া ওয়ার্ড স্থানান্তর করে বেড বাড়ানো হবে। তখন ভোগান্তি কমার পাশাপাশি সেবার মান বৃদ্ধি পাবে।