logo
আপডেট : ৬ মার্চ, ২০২২ ০৯:৫৩
বালুচরে কুমড়া চাষে লাভবান কৃষক
সুজন মোহন্ত, কুড়িগ্রাম

বালুচরে কুমড়া চাষে লাভবান কৃষক

দুধকুমার নদীর বালুচরে কৃষকরা নিজ উদ্যোগে কুমড়া চাষ করছেন

কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার, ফুলকুমার ও গঙ্গাধরসহ ১৬ নদ-নদীর বুকজুড়ে এখন বিস্তীর্ণ বালুচর। এখানে তেমন কোনো ফসল উৎপাদিত হয় না। কিন্তু চরের কৃষকরা এই বালুচরকে ব্যবহার উপযোগী করে ফসল ফলাচ্ছেন। কয়েক বছর ধরে বালি মাটিতে তারা কুমড়ার চাষ করছেন। আর এতে লাভবান হওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যমতে, চলতি বছর প্রায় আট হাজার হেক্টর জমিতে কুমড়া চাষ করেছেন কৃষকরা। যার বেশিরভাগই করা হয়েছে বালুচরে।

অধিকাংশ কৃষক নিজ উদ্যোগে এসব বালুচরে কুমড়া চাষ করলেও কৃষকদের সফলতা দেখে এখন জেলার কৃষি বিভাগ ও বিভিন্ন সংস্থাও তাদের সহযোগিতা করছেন। ফলে চরের কৃষকরা মিষ্টি কুমড়া চাষে আরো আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার দুধকুমার নদীর চরের কৃষক সাফিয়ার রহমান বলেন, ‘গত তিন বছর নিজ উদ্যোগে বালুচরে কুমড়া চাষ করছি। এতে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে প্রতি বছর কুমড়া বিক্রি করে ২০-২৫ হাজার টাকা আয় করেছি। আমি নিজ পরিশ্রমে বালুচরে কুমড়া চাষ করছি। সঠিকভাবে যত্ন নিলে বালুচরে খুবই ভালো কুমড়া চাষ করা যায়।’

কুড়িগ্রাম সদর উপজলোর ব্রহ্মপুত্র নদের ঝুনকার চরের ভূমিহীন কৃষক নবিদুল ইসলাম বলেন, ‘চরের বসবাসকারী ১৫ জন ভূমিহীন কৃষক একত্র হয়ে আমরা সাত হেক্টর জমিতে কুমড়া চাষ করছি। আশা করছি, আল্লাহর রহমতে প্রতিটি কৃষক এ বছর কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা করে লাভ পাবেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা একটি এনজিও থেকে বীজ সহায়তা পেয়েছি। কৃষিবিভাগ থেকে নিয়মিত টেকনিক্যাল সাপোর্ট পাচ্ছি।’

চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে অষ্টমীর চর এলাকার ভূমিহীন কৃষক শেখের আলী জানান, বালুচরে কুমড়া চাষ করে ভালোই লাভবান হচ্ছেন তিনি। ফলন ভালো পাওয়ায় তিনিসহ এই চরের বসবাসকারী অনেক কৃষকই লাভবান হচ্ছেন।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন, ‘চরের কৃষকরা ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত কুমড়ার চারা লাগান। মার্চ মাস থেকেই তারা ফলন পেতে শুরু করেন। এসব চরের উৎপাদিত কুমড়া দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যান। এখানকার ভূমিহীন কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ ও টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেয়া হচ্ছে।’