পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে একজন নারী সংসারের দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি অবসর সময় অনেক ধরনের কাজ করেন। কেউ গাভী পালন, কেউ হাঁস-মুরগি লালন ও সবজি চাষ করেন। কেউ কেউ তৈরি করেন মুখরোচক পিঠা। কেউ বা সুইসুতোর জামা সেলাই, ব্লক বাটিক কিংবা তুলির আঁচড়ে জামা কাপড়কে করেন দৃষ্টিনন্দন।
তাদের এই অবসরের কাজগুলো পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন অনেকেই। এবার তাদের এই কাজগুলোকে বৃহৎ পরিসরে তুলে ধরতে ও নারীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে উদ্যোগ নিয়েছে মৌলভীবাজার উপজেলা প্রশাসন।
সদর উপজেলায় নারীদের এক ব্যতিক্রমী হাট চালু হচ্ছে ‘কইন্যা’ নারীদের হাট। জেলা সদরের চাঁদনীঘাট ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এই হাটের। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এই হাটের উদ্বোধন করা হবে।
নারীদের এইসব উৎপাদিত ও তৈরিকৃত নানাবিধ পণ্য নিয়ে বসবে ‘কইন্যা’ নারীদের হাট। এই বাজারের বিক্রেতা শুধু নারীরা, ক্রেতা সবাই।
চাঁদনীঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আখতার উদ্দীন বলেন, নারীদের অগ্রসর করার জন্য জেলার মধ্যে আমার ইউনিয়নে প্রথম এ হাট। প্রাথমিকভাবে অর্ধশত নারী এ হাটে তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করবেন। চাহিদা অনুযায়ী সে সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করা হবে। প্রথম অবস্থায় সপ্তাহে দুদিন এ বাজার পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরো বৃদ্ধি করা হবে।
চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের বাসিন্দা আফসানা আক্তার বলেন, ‘আমি কাপড়ে ব্লক বাটিকের কাজ করে বিক্রি করি। এই হাটের মধ্যদিয়ে আমার মতো অনেকে তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।’
নারীদের অবসরের উৎপাদিত পণ্য ও কাজগুলো পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীদের প্রশংসা কুড়াচ্ছে জানালেন উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান রংধনুর সাতরং এর নির্বাহী পরিচালক নাসির উদ্দীন আহমদ উজ্জল।
সমাজে পরিবারে নারীদের অবদান বৃহৎ পরিসরে তুলে ধরতে এবং নারীদের অগ্রসর করতে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা প্রশাসন এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা রহমান বাধন।
তিনি আরো জানান, নারীদের নিজেদের তৈরিকৃত কিংবা উৎপাদিত নানাবিধ তৈরিপণ্য ও খাদ্যসামগ্রী স্থান পাবে এই হাটে। দেশব্যাপী এটি একটি নতুন উদ্যোগ। যা জেলা পর্যায়ে সদর উপজেলায় প্রথম এই হাট চালু হচ্ছে।
ব্যতিক্রমী এই হাটের উদ্বোধন সামনে রেখে ইউনিয়ন পরিষদের দেয়ালে দেয়ালে রং-তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন চিত্রকর্ম।