logo
আপডেট : ৮ মার্চ, ২০২২ ১৯:০৫
বৃষ্টির চিকিৎসায় ৫০ হাজার টাকা সহায়তা জেলা প্রশাসকের
মো. জিয়াউর রহমান, নেত্রকোনা

বৃষ্টির চিকিৎসায় ৫০ হাজার টাকা সহায়তা জেলা প্রশাসকের

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় ঘরের খুঁটির সঙ্গে পাঁচ বছর ধরে দুই হাত বেঁধে রাখা সেই শিশু জান্নাতুল বৃষ্টির চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা করেছেন জেলা প্রশাসক কাজি মো. আব্দুর রহমান। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বিকেলে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মা আয়েশা খাতুনের হাতে ৫০ হাজার টাকার একটি চেক তুলে দেওয়া হয়।

এ সময় দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীব উল আহসান, বৃষ্টি ও তার বাবা শাহজাহান মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

ইউএনও রাজীব উল আহসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অসহায় বৃষ্টির চিকিৎসা সহায়তায় জেলা প্রশাসক মহোদয় তার পরিবারকে ৫০ হাজার টাকার একটি চেক দিয়েছেন।

ইউএনও বলেন, ‘আমি বৃষ্টির চিকিৎসার ব্যাপারে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। আগামী শনিবার (১২ মার্চ) বাবা-মাসহ শিশুটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে দেখবেন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। এরপর প্রাথমিক চিকিৎসা দেবেন।’

চিকিৎসকরা প্রয়োজন মনে করলে বৃষ্টিকে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালেও পাঠানো হবে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ওয়াসিম এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলে জানান তিনি।

ইউএনও আরও বলেন, ‘দুই হাসপাতাল থেকেই বৃষ্টির জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। এরপরও যত ধরনের বাড়তি খরচ লাগবে- তা আমরা উপজেলা প্রশাসন থেকে বহন করবো।’

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার দশাল গ্রামের রাজমিস্ত্রি শাহজাহান মিয়া ও গৃহিণী আয়েশা খাতুনের মেয়ে জান্নাতুল বৃষ্টি। দুই বোনোর মধ্যে সে বড়।

২০১৪ সালের ৬ জুন একজন ধাত্রীর মাধ্যমে তার জন্ম হয়। ওই সময় তার নড়চড়ায় কিছুটা অস্বাভাবিকতা দেখা গেলে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করানো হয়।

এর এক বছর পর যেতে না যেতেই দেখা দেয় তার অস্বাভাবিক আচরণ। মুক্ত অবস্থায় সে নিজেই নিজের মাথায় থাপড়াতে থাকে। হাত-পায়ে কামড়াতে থাকে। রাতে না ঘুমিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করে। লোকজনকে মারতে আসে। জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। এসব কারণে নিরূপায়ে তাকে সারাক্ষণ ঘরের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। সাত বছর ধরে এভাবেই চলছে তার দুঃসহ জীবন।

এদিকে গত সোমবার (৭ মার্চ) শিশু বৃষ্টিকে নিয়ে দৈনিক ভোরের আকাশ পত্রিকায় ‘পাঁচ বছর ধরে বাঁধা বৃষ্টির কোমল হাত’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।