দীর্ঘ ১৮ বছর পর শফিউদ্দিন হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। মঙ্গলবার (৮মার্চ) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে রায় কার্যকর করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ।
ফাঁসি কার্যকর হওয়া একজন হলেন চট্টগ্রাম নগরের খুলশীর দক্ষিণ আমবাগানের মৃত ইউনুছ হাওলাদারের ছেলে শিপন হাওলাদার। আরেকজন চট্টগ্রাম নগরের লালখান ডেবারপাড় এলাকার ঈদুন মিয়া সরকারের ছেলে নাইমুল ইসলাম ইমন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন, অতিরিক্ত জেলা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শিউলী রহমান তিন্নী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( ডিএসবি) আফজল হোসেনসহ অন্যানরা।
ফাঁসি কার্যকরের পর অ্যাম্বুলেন্স করে মরদেহ বাড়ি পাঠানো হয়েছে।
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী ফাঁসি কার্যকর করার আগে তাদের শারীরিক অবস্থা চেক করা হয়েছে। দুজন সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল। তওবা পড়ানোর পরে তাদেরকে ফাঁসির মঞ্চে আনা হয়। পুরো কারাগারজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার ছিল।’
এদিকে ফাঁসি কার্যকর করার আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুইজনের ১৯ জন স্বজন এসে তাদের সঙ্গে দেখা করে গেছেন।
নিহত শফিউদ্দিন বাংলাদেশ রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী-১ চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া তিনি ছিলেন আমবাগান এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলে যুক্ত ছিলেন ।
২০০৩ সালের ১৪ জুন চট্টগ্রাম নগরের খুলশীর উত্তর আমবাগান রেলওয়ে কোয়ার্টারের শফিউদ্দিনের বাসায় ঢুকে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
মামলার অভিযোগপত্র জানা গেছে, রেলওয়ের জায়গা অবৈধ বস্তি ও কলোনি দখল, এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার থাকার কারণে তাকে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মাহমুদা বেগম বাদী হয়ে চট্টগ্রামের খুলশী থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০০৪ সালের ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ২৩ জনের সাক্ষ্য নিয়ে এ হত্যা মামলায় দুই ঘাতক শিপন ও ঈমনকে ফাঁসি, সাত আসামিকে যাবজ্জীবন এবং চারজনকে খালাস দেন।
পরে তারা সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করলে তা খারিজ হয়। নিয়ম অনুযায়ী ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে কারাবিধি অনুসারে ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হয়।