logo
আপডেট : ৯ মার্চ, ২০২২ ১৫:৪২
দ্রুত নিয়োগের দাবি সরকারি কলেজ স্বাধীনতা শিক্ষক সমিতির
নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্রুত নিয়োগের দাবি সরকারি কলেজ স্বাধীনতা শিক্ষক সমিতির

জাতীয় প্রেসক্লাবে সরকারি কলেজ স্বাধীনতা শিক্ষক সমিতি এর সংবাদ সম্মেলন।

বৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত সকল শিক্ষক-কর্মচারীকে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে মধ্যে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগের দাবি করেছে সরকারি কলেজ স্বাধীনতা শিক্ষক সমিতি (সকস্বাশিস)। বুধবার (৯ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এটিসহ মোট ৯টি দাবি করেছে সংগঠনটি।

অন্য দাবিগুলো হচ্ছে, ২. শিক্ষক-কর্মচারীদের জ্যেষ্ঠতা এবং পেনশনের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানে যোগদানের তারিখ থেকে চাকরির পুরো সময়কাল গণনা করতে হবে,

৩. চাকরির ৮ বছর পূর্তিতে ৯ম গ্রেড থেকে টাইমস্কেল পেয়ে যারা ৭ম গ্রেড-র বেতন-ভাতা পাচ্ছেন তাদেরকে 'সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা, ২০১৬’ এর ৯ ধারা অনুযায়ী ৭ম গ্রেডেই নিয়োগ দিতে হবে।

৪. যেসব কলেজে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে সেসব কলেজের শিক্ষকদের ‘সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা, ২০১৮’ এর ৮ ধারা মোতাবেক ক্যাডারভুক্তির জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা ১৯৮১' ও 'বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (সাধারণ শিক্ষা) কম্পোজিশন অ্যান্ড ক্যাডার বিধিমালা ১৯৮০ অনুসারে পরবর্তীতে চাকরি স্থায়ীকরণ ও পদোন্নতিসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে।

৫. প্রতিষ্ঠান জিও জারির সময়ে যাদের বয়স ৫৯ এর মধ্যে ছিল তাদেরকে সরকারি যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে।

৬. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে যে সব কলেজের শিক্ষকদের ব্যাপারে মতামত চাওয়া হচ্ছে সে সব শিক্ষকদের ফাইলের ওপর চাওয়া মতামত সর্বোচ্চ ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে এবং অযাচিত মতামত চাওয়া বন্ধ করতে হবে। আংশিক আটকে থাকা শিক্ষকদের ফাইলের কারণে পুরো কলেজেরশিক্ষকদের ফাইল আটকে রাখা যাবে না।

৭. বর্তমান জাতীয় পে-স্কেল অনুসারে টাইম স্কেল/সিলেকশন গ্রেড বাদ দিয়ে ১০ বছর চাকরিকাল অতিক্রান্তের পর পরবর্তী গ্রেড-এ পদোন্নতির বিধান অনুযায়ী সরকারিকৃত কলেজের শিক্ষকদের পদোন্নতি প্রদান করতে হবে।
৮. যারা অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে ইনডেক্স নিয়ে যোগদান করেছেন তাদের পূর্বের প্রতিষ্ঠানের সমুদয় চাকরিকাল গণনা করতে হবে।

৯. এনটিআরসিএ এর নিয়ম অনুযায়ী যিনি যে বিষয়ের শিক্ষক পদে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে নির্বাচিত হয়েছেন তাকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে।

ড. কিষান মোস্তফার সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সরকারি কলেজ স্বাধীনতা শিক্ষক সমিতি (সকস্বাশিস) এর সদস্যরা।

বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১৬ সাল থেকে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কলেজ ও একটি করে মাধ্যমিক স্কুল সরকারিকরণের কাজ শুরু হয়। গরিব, দুঃখী ও মেহনতি মানুষের সন্তানদের নামমাত্র বেতনে পড়াশোনা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে তার এ উদ্যোগ ব্যাপক প্রশংসিত ।

তারা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা জাতিসংঘ ঘোষিত সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সবকটি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। এর মাধ্যমে দেশব্যাপী মানসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

তারা আরো বলেন, মানসম্পন্ন শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের মানসম্পন্ন সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত হওয়া অত্যন্ত জরুরি। মানসম্পন্ন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে না পারলে শিক্ষকদের দ্বারা মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা অনেকটা দুরূহ ব্যাপার। মানসিক তুষ্টি না থাকলে মন থেকে প্রকৃত শিক্ষা বিলানো অসম্ভব। বর্তমানে সরকারিকৃত কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বক্তারা আরও বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর ধরে স্কুলে আছে সরকারিকরণের কাজ। তিনবার বিভিন্ন জায়গায় যাচাই-বাছাই হয়েছে কাগজপত্র। মানসিকভাবে শিক্ষকরা এখন অনেকটাই বিপর্যন্ত। তিন শতাধিক কলেজের মধ্যে দীর্ঘ ৭ বছরে এ পর্যন্ত মাত্র একটি কলেজের এডহক নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কলেজগুলোর শিক্ষকদের দ্রুত এডহক নিয়োগের মাধ্যমে সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে না পারলে শিক্ষায় বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শিক্ষকদের আত্তীকরণ সম্পন্ন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সরকারি বেতনে পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কলেজগুলোতে সরকারি সাইনবোর্ড লেখা দেখে ভর্তি হয়ে বেসরকারি নিয়মে বেতন ও ফি দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা বিভ্রান্তিতে পড়ছে। এরইমধ্যে আমাদের প্রায় এক তৃতীয়াংশ শিক্ষক-কর্মচারী সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই অবসরে গেছেন।