logo
আপডেট : ৯ মার্চ, ২০২২ ২০:১৮
সাকিবের ‘ছুটি’
ক্রীড়া প্রতিবেদক

সাকিবের ‘ছুটি’

সাকিব ইস্যুও অবসান হলো অবশেষে। মানসিক ও শারীরিক ভাবে ফিট না থাকায় ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে চেয়েছিলেন সাকিব। সে মোতাবেক সাকিবকে ছুটি দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ক্রিকেটের সব ফরম্যাটে বিশ্রামে থাকবেন তারকা এই অলরাউন্ডার। তার মানে, আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাওয়া হচ্ছে না তার।

সাকিবের সঙ্গে আলোচনা করেই দ. আফ্রিকা সফরের দল ঘোষণা করা হয়। কিন্তু দল ঘোষণার তিনদিন পর সাকিব জানান, সফরটিতে যেতে চান না তিনি। রোববার দুবাই যাওয়ার আগে সাকিব বলে যান, আফগান সিরিজ তিনি উপভোগ করেনি। তিনি ছিলেন প্যাসেঞ্জারের মতো। এই মূহূর্তে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মানসিক ও শারীরিক পরিস্থিতি তার নেই।

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন কড়া ভাষায় সাকিবের বক্তব্যের সমালোচনা করেন। মঙ্গলবার একই সুরে কথা বলেন জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর ও বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন। বুধবার সব ঘটনা এক বিন্দুতে এনে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানান বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। তিনি জানান, আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেট থেকে সাকিবকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন যে সাকিব দুবাই যাওয়ার আগে আমাকে বলেছিল যে সে ফিজিক্যালি ও মেন্টালি ফ্যাটিগ ও স্ট্রেসড। সে আমাকে ফোনে বলেছিল এই মুহূর্তে কোন ধরনের ক্রিকেট সে এনজয় করছে না। আমি বলেছি এই মাত্র আফগানিস্তান সিরিজ শেষ করেছ এজন্য এটা হতে পারে। তুমি দুই দিন সময় নাও চিন্তা করো। তারপর জানাও। তো আজকে দুই দিন শেষ হওয়াতে আমি নিজে ফোন করে তার কাছ থেকে সিদ্ধান্ত জানতে চেয়েছি যে তোমার প্ল্যানটা বল। সে বলল, ‘আমি এখনো মনে করি শারীরিক ও মানসিকভাবে আমি আনফিট।’ সে জন্য সে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যেতে চাচ্ছে না। সে এটা স্কিপ করতে চাচ্ছে। এরপর আমরা বোর্ড সভাপতির সাথে বসেছি, সিইও ছিল, বোর্ড পরিচালকও ছিল কয়েকজন। তো সাকিবের নিজের স্বার্থের কথা চিন্তা করে আমরা সিদ্ধান্ত দিয়েছি যে তাকে যেহেতু সে ফিজিক্যালি ও মেন্টালি আনফিট বলছে তো তাকে বিশ্রাম দেয়া দরকার। এজন্য আমরা তাকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেট থেকে বিশ্রাম দেওয়ার জন্য সম্মতি দিয়েছি। সে ওই ৩০ তারিখ পর্যন্ত সব ফরম্যাটের ক্রিকেট থেকে কমপ্লিটটি রেস্টে থাকবে।’

সাকিব দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। তার সার্ভিস দলের দরকার। এ প্রসঙ্গে জালাল ইউনুস বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ এমনিতেই ১৫ এপ্রিল তারিখ পর্যন্ত। যেহেতু সে রেস্ট চেয়েছে, তো এপ্রিলের ৩০ তারিখ পর্যন্ত রেস্ট দিয়েছি। যেহেতু সে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার, অলরাউন্ডার। আমরা মনে করছি তার সার্ভিসের দরকার আছে আমাদের। সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। যেহেতু সে কমপ্লিট রেস্টের কথা বারবার বলেছে ওইদিকটা চিন্তা করে দিয়েছি। সে যেহেতু রেস্ট চেয়েছে তো সব ধরনের ক্রিকেট থেকেই রেস্ট চেয়েছে তো আমরা তাকে রেস্টটা দিয়েছি। কি খেলবে না খেলবে না সেটা আমরা চিন্তা করিনি। আজকে আমাদের আবার জানিয়েছে এই সিরিজটাই খেলতে চান না।’

বিসিবির শক্ত অবস্থানের কথা শুনা যাচ্ছিল। বিশেষ করে ফুলস্টপ শব্দটি। যাতে এমন সমস্যা ভবিষ্যতে সামনে না আসে। এই সিদ্ধান্তে কী সেটা হলো? তিনি বলেন, ‘এটার উত্তর এখন দিতে পারছি না। এটা বোর্ডের সিদ্ধান্ত। সাকিবকে নিয়ে কোন কিছু করতে হলে আমাদের ডিসকাস করতে হবে। সে আসুক। সে নিজেই বলেছে যে আমাদের সঙ্গে বসবে। এরপর তার পরিকল্পনা শুনি, সেই অনুযায়ী আমরা পরিকল্না করবো।’

সাকিব কোড অব কন্ডাক্ট ভেঙেছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে জালাল বলেন, ‘ব্রেক করেছে কিনা। আমি বলেছি মিডিয়ায় বলার আগে আমাদের সঙ্গে বলা উচিত ছিল। সে বলেছে যে ব্যাপারটা সে জানে। আমাদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। হিট অব দ্যা মোমেন্ট সেটা সে বলতে পারে। যেটা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কিন্তু এর পরে কি সিদ্ধান্ত বা কি হবে সেটা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। সে আসুক তারপর দেখা যাবে।’

সাকিবের এমন আচরণ জুনিয়রদের জন্য অনুকরণীয় কি না। জালাল ইউনুস বলেন, ‘এটা কখনই ভাল উদাহরণ না। এটা আমরাও স্বীকার করি। কারণ আরো ১৪জন ক্রিকেটার আছে। তারা তো সিনিয়রকেই ফলো করে। আমরাও চাইবো সিনিয়রদের ভাইবটা পজিটিভ হওয়া উচিত।’